সংলাপ: আ’লীগের সাথে ‘সীমিত পরিসরে’ আলোচনা চায় ঐক্যফ্রন্ট

সংলাপ: আ’লীগের সাথে ‘সীমিত পরিসরে’ আলোচনা চায় ঐক্যফ্রন্ট

ঢাকা, ৭ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলছেন, তফসিল ঘোষণা হলেও তারা সীমিত পরিসরে আলোচনা চালিয়ে যেতে চান।

বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ফ্রন্টের মুখপাত্র মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, সাত দফার মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন- এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা প্রস্তাব করেছি, আমরা এ বিষয়ে সীমিত পরিসরে আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই।

তফসিল ঘোষণার বিষয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছেন, এর সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করি প্রয়োজনে তফসিল পুনরায় ঘোষণা করা যেতে পারে।

এদিকে, সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোলকে জানিয়েছেন, ঐক্যফ্রন্ট আলোচনার জন্য আরো সময় চায়।

সংলাপের ফলাফল কী?

সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা, ঐক্যফ্রন্ট নেতারা আশার আলো দেখছেন কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মীর্জা ফখরুল বলেন, এককথায় সেটি বলা যাবে না। জনগণই বলবে, আশার আলো দেখা যাবে কিনা।

ড. কামাল হোসেন বলেন, বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা আর হবে না এবং এ ধরণের মামলায় আর গ্রেপ্তার হবে না, প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের আশ্বাস দিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্টের দাবি সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ৯০ দিনের মধ্যে যেন নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হয়।

তবে সরকার এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে একজন প্রধান উপদেষ্টার অধীনে ১০ জন উপদেষ্টামণ্ডলীর সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের পুরনো ফর্মুলা তুলে ধরা হয়। তবে তাদের এই দাবিগুলো ‘সংবিধানসম্মত নয়’ বলে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মি. কাদের আরো বলেছেন মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পরে নির্বাচনের দাবির ক্ষেত্রে কোনো দূরভিসন্ধি বা কৌশল থাকতে পারে যেখানে তৃতীয় কোনো শক্তির আসার সুযোগ থাকে। এটিও গ্রহণযোগ্য নয়।

তবে ওবায়দুল কাদের জানান, নির্বাচনের সময় সব পক্ষকে সমান সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক মামলার সুরাহা করাসহ সংবিধান সম্মত যেসব বিষয়ের দাবি তারা করেছে সেগুলোর বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেবে।

ঐক্যফ্রন্টের আরো সময় চাওয়ার বিষয়ে মি. কাদের বলেন নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালীন অবস্থাতেই আলোচনা চলতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিক সংলাপ আর হবে না।

সংলাপ শেষে মি. কাদের বলেন, ‘সংলাপ ইতিবাচক হয়েছে।’

সংলাপ শেষে কোনো বক্তব্য দেননি বিএনপি’র নেতারা। তারা পরবর্তীতে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানানো হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১২ জনের দল সংলাপে অংশ নেয়।

ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১১ জন অংশ নেন সংলাপে। ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।

প্রথম দফা সংলাপে কী হয়েছিল?

এর আগে পহেলা নভেম্বর ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রথম সংলাপে বসে সরকার। সেসময় গণভবনে তিন ঘণ্টা দীর্ঘ আলোচনা হয় দুই পক্ষের মধ্যে যা শেষ হয়েছিল কোন রকম সমঝোতা ছাড়াই। সেই আলোচনার জের ধরে রবিবার ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখে আবারো আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান।

চিঠিতে বলা হয়, পহেলা নভেম্বরের সংলাপের পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ বিষয়ে আরো আলোচনার সুযোগ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই পরবর্তী আলোচনার জন্য চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট।

বিএনপি, গণফোরাম, জাসদের একাংশ এবং নাগরিক ঐক্য নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ বেশ কয়েকটি দাবি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/২৩৫৫ঘ.)