নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা ২০ দলের

নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা ২০ দলের

ঢাকা, ১১ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ২০ দলীয় জোটের নেতা ও এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

রবিবার দুপুর ১টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।

অলি আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনকালে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও আমাদের নির্বাচনী সমঝোতা হবে। আমরা চাই, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়া হোক, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হোক, ভোটের সাত দিন আগে ও ভোটের দুদিন পর বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানাচ্ছি।’

অলি বলেন, ‘নির্বাচনের একদিন পর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব। বিদেশি কূটনৈতিকরা নিজ দেশে ছুটিতে যাবেন। তাই এ সময় নির্বাচন না করে তফসিল এক মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

অলি আহমদ আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংসদ বহাল রেখে আবারও একতরফা ভোট করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই দলীয় প্রশাসনকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। এদের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোট হবে কি না, জনমনে সন্দেহ আছে।’

অলি আরো বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া সবার সমান সুযোগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই আমাদের দাবি অনুধাবন করলেও বর্তমান অবৈধ সরকার সেটি মানেনি।’

২০ দলের এ নেতা বলেন, ‘সংলাপে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, রাজনৈতিক মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। কিন্তু এরপর গ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি আর বেড়ে গেছে। এখন ২০ দলের সিনিয়র নেতাদের নামেও নতুন করে মামলা দিচ্ছে।’

অলি আহমদ বলেন, ‘অনুগত নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর দাবিকে আমলে নেয়নি। বরং তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে অলি আহমদ বলেন, ‘সারা বিশ্বে ইভিএম বর্জন হলেও বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারকে আবারও বিজয়ী করতে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এলডিপি প্রধান বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিকালে সাংবাদিকদের অবদান অনেক বেশি। তাই আপনাদের মাধ্যমে আমরা আগামী নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের জোটের দাবিগুলো তুলে ধরেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা গত কয়েকটি বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেগুলোই তুলে ধরা হলো।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এল ডি পি) চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, জাতীয় পার্টির ( কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহম্মদ ইবরাহিম, জমিতে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মোহম্মদ ওয়াক্কাস, মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী, মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এ এইস এম কামরুজ্জামান খান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির চেয়ারম্যান ড.ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাস মিয়া প্রধান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণি, পিপলস লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুব হোসেন ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১৪২৫ঘ.)