টিকে থাকার জন্য শেষ মরণকামড় দিচ্ছে সরকার: রিজভী আহমেদ

টিকে থাকার জন্য শেষ মরণকামড় দিচ্ছে সরকার: রিজভী আহমেদ

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রধান নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং আওয়ামী হানাদারদের কবল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, সারাদেশে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। এই অবৈধ সরকার আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি আঁচ করতে পেরে হামলা গ্রেফতার বাড়িয়ে দিয়েছে। টিকে থাকার জন্য শেষ মরণকামড় দিচ্ছে এখন।

বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে-আইজিপি সব ডিআইজি ও এসপিদেরকে ঢাকায় তলব করেছেন আজ। বিএনপির আড়াই লাখ নেতা-কর্মীদের একটি তালিকা করেছে পুলিশ। ডিআইজি এবং এসপিদের সঙ্গে বৈঠকের পর চিরুনী অভিযান চালিয়ে ঐসব নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা করা হবে। মূলত শত বাধা বিপত্তি-গ্রেফতার-হামলা উপেক্ষা করে চারিদিকে ধানের শীষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে থামিয়ে দিতেই এই অভিযানের পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।

তিনি বলেন, ৫ বছর ঢাকায় আরাম আয়েশে লুটপাট করে কাটিয়ে এখন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে চরম প্রতিকুলতায় পড়েছে নৌকার প্রার্থীরা। দিকে দিকে জনগন তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের রোষের মুখে পড়ছে। দলীয় সন্ত্রাসী আর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সাধারণ জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। সময় এখন জনগণের। এই কারণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফিয়া ডনদের মতো বলছেন-‘আর ভাষণ নয়, এ্যাকশনে যেতে হবে’। অর্থাৎ এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি নিজেদের দূর্বিনীত ক্যাডারদেরকে সহিংসতার পথ অবলম্বনের জন্য উস্কানি দিলেন। অব্যাহত মামলা-হামলা, গুম-খুন, দুর্নীতি ও দূর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে জনগণের রায় এখন প্রতিফলিত হবে। আমরা নিশ্চিত, এবার সরকারী সকল বাধা অতিক্রম করে সারাদেশে সাহসী জনতা ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে আনবেই ইনশা-আল্লাহ।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘সারাদেশে আওয়াজ উঠেছে নৌকাডুবির। এখন পতনের ক্ষণগণনা চলছে। তাই পলায়নপর সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে ক্ষমতা এবার হাতছাড়া হয়ে যাবে।’

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার জন্য যা যা করার দরকার আওয়ামী লীগ তাই করবে। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন বানচালও করে দিতে পারে তারা। সেই কারণে আমরা গতকাল দলের পক্ষ থেকে আজকেই সেনা মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবির ঘন্টা খানেক পরেই তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের দিনের ৫ দিন আগে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিলো নির্বাচন কমিশন। আমাদের আশঙ্কাই ঠিক হলো-এই সময়ের মধ্যে তারা নির্বাচনী মাঠ বিরান ভূমিতে পরিণত করবে আওয়ামী চেতনায় সাজানো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা। তবে আমরা সকল বাধা অতিক্রম করে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ভোটের লড়াই করে যাবো। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণই আমাদের শক্তি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সারাদেশে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে মহড়া দিচ্ছে। এসব অপরাধের কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ কর্মকর্তারা মিথ্যা মামলা দায়ের ও গণগ্রেফতারের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রেফতারের নামে মানুষকে পণ্য বানিয়ে বানিজ্য করছে পুলিশ। বিনা কারণে পুলিশ বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশ আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে। নতুন নতুন মামলায় বিস্ফোরক ও মাদক দিয়ে কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এসব জানিয়ে কোন লাভ হচ্ছে না। পুলিশ নির্বাচন কমিশনের কোনো কথা শুনছে না বা নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করছে না। আওয়ামী লীগের সব কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন গণগ্রেফতার বন্ধ করতে বললেও পুলিশ এসব আমলে নিচ্ছে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর:(অব) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫০১ঘ.)