কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় সাড়ে ৫টার দিকে।

বৈঠকের শুরুতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাই ব্রিফিংয়ের পর কূটনৈতিরা নানা বিষয়ে জানার জন্য প্রশ্ন করেন। এ সময়ে সেখানে উপস্থিত নেতারা এ সকল প্রশ্নের জবাব দেন। কূটনৈতিকদের প্রশ্নে বেশিরভাগই বেগম খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে ও আগামী জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রীক ছিলো বলে জানা গেছে। বিএনপির পক্ষে থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে এটাকে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

মামলার রায়ের পর সরকার প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে প্রাপ্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে বলেও অভিযোগ করেন। এছাড়া মামলার রায়ের অনুলিপি প্রদান নিয়েও সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলে জানান।

বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির একজন নেতা সাংবাদিকদেরকে জানান, এবারের বৈঠকটিতে কূটনীতিকদের বেশি তত্পরতা দেখা গেছে। তারা অনেক বেশি কিছু জানার চেষ্টা করেছেন। তারা মনযোগ দিয়ে সকল বক্তব্য শুনেছেন এবং নোট নিয়েছেন। আবার বিএনপির পক্ষ থেকেও তাদেরকে মামলার সকল ডকুমেন্টস সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানান।

বিএনপির নেতারা কূটনৈতিকদের আরো জানান, এ বছরে জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার নানাবিধ ষড়ষন্ত্র করে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে। সরকার এখন একদলীয় শাসনব্যাবস্থা চালু করতে চাইছে বলে উপস্থিত কূটনীতিকদের জানান। এসমেয় তিনি সারাদেশে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার একটি পরিসংখ্যন তুলে ধরেণ এবং তাদেরকে দেন বলে জানা গেছে।

মহাসচিব তার লিখিত বক্তব্যে জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হয় না। এ কারণে বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চাইছে।

বিএনপির কূটনৈতিক উইংয়ের একজন সদস্য জানান, সরকারের এমন আচরণে অনেক কূটনীতিক উস্মা প্রকাশ করেছেন। তাদের বেশিরভাগ সদস্যই বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। তাকে এখন ভিআইপি মর্যাদার ডিভিশন দেয়া হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছেন। এসময়ে কূটনৈতিকরা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ার পর বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন। তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে সকলের অংগ্রহণে নিরপেক্ষ দেখতে চান বলে জানিয়েছেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, এ জে মোহাম্মাদ আলী, ড. ইনামুল হক চৌধুরী, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা, ফাহিমা মুন্নি ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।

বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, তুরস্ক, জাপান, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা ও চীনের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া বৈঠকে যোগ দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৩৫ঘ.)