স্বাধীনতা দিবসে জাসাস’র আলোচনা সভায় মির্জা আলমগীর

‘প্রধানমন্ত্রী হতে নয়, মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে খালেদা জিয়া’

‘প্রধানমন্ত্রী হতে নয়, মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে খালেদা জিয়া’

ঢাকা, ২৬ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রাণপণ চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হতে নয়, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছেন গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া।

সোমবার সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ভাসানী মিলনয়াতনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)-এর আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা আলমগীর।

তিনি বলেন, জীবনের শেষ সায়াহ্নে এসে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না, সরকারে যেতে চাই না। কিন্তু আমি আমার দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই। ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই।

মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এতো নির্যাতন নিপীড়নের পরও বলছি- একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চাই। আমরা যখন বলছি সঠিক লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, তাহলে আমরা নির্বাচনে যাবো, সেই বছরে আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন, তাকে আপনারা কারান্তরীণ করলেন। এর অর্থ কী? বিএনপি যেন নির্বাচনে না আসে, বেগম জিয়া, তারেক রহমান সাহেবকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পরিস্কার ষড়যন্ত্র।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারান্তরীণ হয়েও বেগম জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে চলছেন, তিনি মাদার অব ডেমোক্রেসি, গণতন্ত্রের মাতা। দেশ মাতা। নিজের জন্য তিনি চিন্তা করেননি, দেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য তার এ ত্যাগ। বেগম খালেদা জিয়া এখনো বলছেন- ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না, আমি সরকারে যেতে চাই না। কিন্তু আমার দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই আমি। ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে চাই।’ আমরা এ কথাগুলো ভারাক্রান্ত হয়ে বলছি বলেও জানান মির্জা আলমগীর।

তিনি বলেন, সরকার ভয় পেয়ে উন্মুক্ত জায়গায় বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পেছন দিক দিয়ে ঢুকতে হয় এখন আমাদের। সামনে দিয়ে ঢুকতে পারি না কেনো? এ অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী সেখান দিয়ে যাতায়াত করছেন। আমাদের গাড়ি দিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয় না, আমরা হেঁটে যেতে হয়। এত বাঁধা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও লাখো মানুষ আজকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে উপস্থিত হয়েছেন। আমাদের কোথাও কোনো অনুষ্ঠান করতে দেয়া হয় না। না দেয় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে, না দেয় আমাদের অফিসের সামনে, না দিচ্ছে মহানগর নাট্যমঞ্চে। কেনো দিচ্ছে না? ভয় পাছে, এ অনুষ্ঠানে লাখো মানুষ রাস্তায় নামবে। জন জোয়ারের ভয়ে তারা বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না।

নির্বাচনে যাতে কাজ করতে না পারে সে জন্য আমাদের ১৮ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে অবৈধ এ সরকার, অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ নেত্রী জেলে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাসিত। এত নির্যাতন-অত্যাচারের পরও নেতা-কর্মীরা বিএনপি ছেড়ে যায় না। বরং আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করছি। চলমান এ সংগ্রাম আমাদের বাঁচা-মরার সংগ্রাম। আমাদের অস্তিত্বের সংগ্রাম।

জাসাস'র সভাপতি মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক ও চিত্রনায়ক আশরাফুল উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, জাসাস সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা হেলাল খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবুল আহমেদ, সহ-সভাপতি ও কণ্ঠ শিল্পী রিজিয়া পারভীন, উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক মীর ছানাউল হক, অভিনেতা শিবা শানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩০০ঘ.)