জনগণের মালিকানা ক্ষমতাশালীরা দখল করে রেখেছে : কাদের সিদ্দিকী

জনগণের মালিকানা ক্ষমতাশালীরা দখল করে রেখেছে : কাদের সিদ্দিকী

গাজীপুর, ২৮ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : কৃষক-শ্রমিক জনতালীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিকানা মানুষের- এ কথা লেখা থাকলেও ভূমিদস্যু ও লুটেরারা যেভাবে অন্যের জমি দখল করে রাখে, সেভাবে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা ক্ষমতাশালীরা দখল করে রেখেছে। সরকারি অফিস আদালতে গেলেই টের পাওয়া যায় দেশের মালিক কারা।

বুধবার সকালে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন “বড় বড় মানুষ বাংলাদেশের মাথা বিশ্ব দরবারে নিচু করেছে, আর ছোট ছোট ছেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে, স্বাধীনতা সম্মাননা পদক থেকেও সরকারি লোকেরা চুরি করে। শিক্ষামন্ত্রী নিজে বলেছেন, তিনি চোর, তার সহকর্মী মন্ত্রীরাও চোর। ভোট ছাড়া যারা সরকারে থাকে, আমি সেই দল করি না, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করি। যৌবনে আমার প্রেম হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে, এই দেশের সঙ্গে।”

ভারতের আসামের এক বিধায়কের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এখন কী হবে তা জানি না, তবে ৭১-এ ভারতের এমন কোনো ক্ষমতা ছিল না যে তারা বাংলাদেশ দখল করে নেবে। যে বাঙালিকে পিন্ডি বাগে আনতে পারেনি, দিল্লির পক্ষে তাদের পদানত করা সম্ভব ছিল না। আমরা জয়দেবপুরকে গাজীপুর, বিক্রমপুরকে মুন্সিগঞ্জ বানাতে পারি কিন্তু একটি লঞ্চ ডুবে গেলে উঠাতে পারি না, বিল্ডিং ধসে পড়লে মানুষকে বাঁচাতে পারি না।”

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গতাজ তাজ উদ্দীনের নাতিকে যেদিন গুলশান থানায় নির্যাতন করা হয়েছে সেদিন প্রকারন্তরে গোটা মুক্তিযুদ্ধকে ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে এমনকি আমাকেও নির্যাতন করা হয়েছে, অথচ তার কোনো বিচার হয়নি। আমরা নিজের মানুষকে, নিজের ঘরের মানুষকে সম্মান করতে শিখি নাই, সম্মান দিতেও জানি না।

বঙ্গবীর বলেন, এখানে এই যে প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তা মানবের হবে, দানবের হবে না। এই প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে ধাবিত হবে, এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সাহসী হবে, দরিদ্রকে ভালোবাসতে শিখবে আবার অত্যাচারীর সামনে সিনা টান করে দাঁড়াবে, সেটাই হবে এই প্রতিষ্ঠানের সার্থকতা। ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যদি শতভাগ পাশ করতে পারে, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, একদিন এই কলেজ দেশের এক নম্বর কলেজ হবে। তিনি আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে যারা পড়ালেখা করবে তারা যেন মানুষ হয়, তারা যেন অমানুষ না হয় কারণ আমাদের দেশে মানুষের বড় অভাব। আল্লাহ যদি অনুমতি না দেন তবে কোনো কিছুই হয় না। ইকবাল সিদ্দিকী কলেজ আমার জীবনে গৌরব, আমি যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন এই কলেজের কথা আমার মনে থাকবে। আমি আল্লাহ তা’য়ালার কাছে প্রার্থনা করি, এই প্রতিষ্ঠানকে তিনি যেন তাঁর ছায়াতলে রাখেন।”

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মনিষা দেবনাথের সঞ্চালনায় ওই অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর-এর সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ. কে. এম. বদরুল আলম লিটন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ছবদের হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম হেলাল, মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ ফিরোজ মিয়া, ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান, ব্রাইট মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক ও কচি-কাঁচা একাডেমির প্রথম ছাত্র মেজর হায়দারের গর্বিত পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম, এইচএসসি পরীক্ষার্থী মুক্তাদী রেজা মুন্না ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরিন আক্তার জুই।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩১১ঘ.)