কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

ঢাকা, ১৩ মে (জাস্ট নিউজ) : ঢাকায় অবস্থান করা বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

রবিবার বিকেল সোয়া ৪ টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটের দিকে।

জানা যায়, কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, স্পেন, জাপান, রাশিয়াসহ মোট ১৬টি দেশের কূটনীতিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিএনপি নেতাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা খান, তাবিথ আউয়াল, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতেই সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কূটনীতিকদের একটি লিখিত কপি দেয়া হয়। যাতে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিলম্ব, চিকিৎসায় অবহেলা, খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সরকারি দলের প্রভাব বিস্তার, নেতাকর্মীদের গ্রেফতারসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হয়।

খুলনা সিটি নির্বাচনে সরকার নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করছে বলে তাদের জানানো হয়। এভাবে চললে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বিএনপি নেতারা। বৈঠকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে কূটনীতিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দেয়া সাজা ও হাইকোর্ট প্রদত্ত জামিনসহ কারাগারে তার অসুস্থতা এবং তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দেয়া, নিকটাত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে না দেয়ার বিষয়গুলো কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়।

১৫ মে অনুষ্ঠেয় খুলনা সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনসহ ক্ষমতাসীন দলের তাণ্ডবের কথা তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে খুলনায় বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতারের বিষয়টিও কূটনীতিদের অবহিত করা হয়।

নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশিসহ ভোটকেন্দ্রে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দেয়া প্রাণনাশের হুমকির কথাও তুলে ধরা হয়। নারী এজেন্টদের বাড়িতে নারী পুলিশ পাঠিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার কীভাবে নীলনকশা করছে’- বিএনপির পক্ষ থেকে তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। কিন্ত আমাদের চেয়ারপারসন কারাগারে।

এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও ক্ষমতাসীনরা কোনো আলোচনায় বসতে চাচ্ছে না। সরকার ন্যূনতম গণতান্ত্রিক স্পেস দিচ্ছে না। বিরোধী মতকে নানাভাবে দমন করছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব কিনা তা আপনারাই ভেবে দেখুন।

বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপি কীভাবে চলছে- উপস্থিত এক কূটনীতিকের এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করবেন।

সেই অনুযায়ী তারেক রহমান বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।

এদিকে বৈঠক শেষে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সংক্ষিপ্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করে সরকার খুলনা মহানগরীতে সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করছে।

 

(জাস্ট নিউজ/জেআর/২১২৪ঘ.)