ভোট ডাকাতির ব্যাপক পরিকল্পনা করা হয়েছে : মঞ্জু

ভোট ডাকাতির ব্যাপক পরিকল্পনা করা হয়েছে : মঞ্জু

ঢাকা, ১৪ মে (জাস্ট নিউজ) : খুলনা সিটিতে আগামীকাল ভোট ডাকাতির ব্যাপক পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগের ৫ নেতা বৈঠক করেছেন। খবর পেয়েছি, কাল ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং করা হবে। ভোট কেন্দ্রগুলো দখলে নেয়া হবে। নিজেরা নিজেরা হট্টগোল করে ভোট কেন্দ্র ফাঁকা করে রাখবে।

তিনি বলেন, আজ রাত ১২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত গণগ্রেফতার অভিযান চালানো হবে বলে আমরা জেনেছি।

মঞ্জু বলেন, বহু বহিরাগত শহরে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগের হিংস্ররূপের কথা তুলে ধরে তাদেরকে ‘ধিক’ জানান তিনি।

মঞ্জু বলেন, তবুও জনগণ আমাকে ভোট দিতে চায়। জনগণের রায় ইতোমধ্যে আমি পেয়েছি।

উল্লেখ্য, গতকাল রবিবারও এক সংবাদ সম্মেলনে এ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছিলেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর মিয়াপাড়ার বাসভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, সরকার কেসিসির ভবিষ্যত নগরপিতা নির্বাচনের সুষ্ঠু প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ নির্বাচন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি পরীক্ষা ছিল। সেটাতে ইতোমধ্যেই তারা ফেল করেছে।

তিনি জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে না নিয়ে জনগণকে ফিরিয়ে দিয়ে ভীতিমুক্ত উৎসবমুখর পরিবেশে নগরপিতা নির্বাচিত করার পরিবেশ তৈরি করতে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানান।

মঞ্জু বলেন, সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। জনগণ ও ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনাও ছিল। নগরবাসীর স্বপ্ন ছিল ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার। কিন্তু সরকারের একটি ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজনে সবকিছুই ভেস্তে যেতে বসেছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের অতিউৎসাহী ভূমিকা এবং নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজনকে আরো ত্বরান্বিত করেছে।

নগরীর খালিশপুর, দৌলতপুর, টুটপাড়া, লবণচরা ও বানিয়াখামারসহ বিভিন্ন এলাকায় ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের রাতে এসব এলাকায় মোটরসাইকেল মহড়া দেয়া হয়েছে। এসব মোটরসাইকেলে চরমপন্থী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দেখা গেছে। ভোটের আগের রাতে বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং নেতা-কর্মীদের ওপর আরো কঠিন আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা মহানায়কের ভূমিকা পালন করছেন। সরকার বিএনপিকে বাইরে রেখে এক দলীয় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশপ্রেমিক পুলিশ এ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু শতভাগ ভোট কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, এখনও সময় আছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আগামীকালই সেনাবাহিনী এবং প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করুন। এতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, মেয়র প্রার্থী হিসেবে তিনি নিজেও শঙ্কামুক্ত নন। সাত দিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। শনিবার রাতেও ২ হাজার কর্মীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। নতুন করে আরো ১১ জনসহ দু’শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্বাচনী এজেন্ট এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল সিনিয়র নেতাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এতে গোটা নগরীতে আতঙ্ক ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নগরবাসী সার্বিক পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারপরও নগরবাসী ধানের শীষে ভোট প্রদানের মাধ্যমে আওয়ামী দুঃশাসনের সাড়ে ৯ বছরের জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি এবং তার দলের নেতা-কর্মীরা গত ১০ দিনে ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে জনাব মঞ্জু বলেন, ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের ভয় দেয়া হচ্ছে। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন মহিলা পুলিশ বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে নেতা-কর্মীদের পরিবারের নারী সদস্যদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এজন্য সরকার, পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকে জনগনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কেউ দায় এড়াতে পারবে না। কারণ অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশা ধূলিসাৎ হয়ে যাক এটি কাঙ্ক্ষিত নয়।

খুলনার সাংবাদিকদের একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণায় নামায় তিনি জাতির বিবেকদের কাছে এ ধরনের রাজনৈতিক পক্ষপাত কাক্ষিত নয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু সকল ভোটারের কাছে পৌঁছাতে না পারায় ক্ষমা চেয়ে আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে একটি করে ভোট প্রদানের জন্য নগরবাসীর প্রতি আকুল আবেদন জানান।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২৪৪ঘ.)