দলবল দেখে আদেশ দিই না: প্রধান বিচারপতি

দলবল দেখে আদেশ দিই না:  প্রধান বিচারপতি

ঢাকা, ১৬ মে (জাস্ট নিউজ) : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বহালের রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়ে তার আইনজীবীদের প্রার্থনা নাকচ করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার দুপুরের দিকে এই আদেশ দেন। শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা দলবল দেখে আদেশ দিই না।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখে আজ রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, জামিননামা দাখিল করতে চাই। তাই ঘোষিত রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চাচ্ছি। আদালত রায় ঘোষণা করেছেন, যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও থাকবে। রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশের কপি দিন।

মোহাম্মদ আলীর এমন প্রার্থনার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বলেন, রায় ঘোষণার পর সংক্ষিপ্ত আদেশের কপি দেওয়ার নজির নেই।

মোহাম্মদ আলী বলেন, রায়ের পর একমুহূর্তও কাউকে আটকে রাখা হলে, তা হবে বেআইনি আটক। এ জন্য সংক্ষিপ্ত আদেশ চাচ্ছি।

মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে আদালত বলেন, আপনি যা বলেছেন, তা আমাদের রুলসে নেই।

তখন মোহাম্মদ আলী বলেন, কোনো ব্যক্তির স্বাধীনতা অন্য যেকোনো বিষয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আদালত বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় পাবেন।

বেঞ্চের এক বিচারপতি বলেন, সংক্ষিপ্ত আদেশ দেওয়ার নজির নেই।

মোহাম্মদ আলী বলেন, নজির নেই। আপনারা নজির সৃষ্টি করতে পারেন।

আদালত বলেন, আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হলো।

এ পর্যায়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি একা এসেছি। দলবল নিয়ে আসিনি।

মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, দল দেখে কি আমরা আদেশ দেব? দলবল দেখে আদেশ দিই না।

মোহাম্মদ আলীকে উদ্দেশ করে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, আপনি এটা কী বললেন?

বেঞ্চের অপর এক বিচারপতি মোহাম্মদ আলীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি যে মন্তব্য করেছেন, সেটি আপত্তিজনক। আপনি কি আমাদের ফোর্স করতে পারেন? আপনি একজন আইনজীবী। কোনো দলীয় লোক নই।

মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে বেঞ্চের আরেক বিচারপতি বলেন, আপনার প্রার্থনা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তর্ক করছেন কেন?

তখন মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা ঠিক হয়নি।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ছয় থেকে সাত মিনিটের মতো এই শুনানি চলে।

শুনানিকালে এ জে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নওশাদ জমির, কায়সার কামাল ও মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪৫৬ঘ.