নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন দুরভিসন্ধি: বিএনপি

নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন দুরভিসন্ধি: বিএনপি

ঢাকা, ২৫ মে (জাস্ট নিউজ) : সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারণার সুযোগ দিয়ে আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র’ হিসেবেই দেখছে বিএনপি।

শুক্রবার সকালে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটা তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইছে তারা তাই করছে। এখন তারা নির্বাচনী আচরণবিধি পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। যেটা করছে এটা দুরভিসন্ধিমূলক। এই আচরণবিধি পরিবর্তন করা একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ তারা (ক্ষমতাসীনরা) ভবিষ্যতে সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে থেকে নিজের প্রচারণা যাতে করতে পারেন উইথ অল দ্যা প্রটোকলস, তার সমস্ত ক্ষমতা ও তার সমস্ত প্রভাব দিয়ে। সেটাকে মাথায় রেখে আজকে লেজুড় সংস্থা নির্বাচন কমিশন এই আচরণবিধি পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।

এরপরও সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা বাংলাদেশের মাটিতে করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

খুলনা সিটির মতো গাজীপুরে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করে মওদুদ বলেন, খুলনায় জনগণের নির্বাচন হয় নাই, পুলিশ-র‌্যাব নির্বাচন করেছে। সেখানে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয় নাই। এখন তারা (ক্ষমতাসীন) খুলনা স্টাইলে গাজীপুরে নির্বাচন করতে চায়। খুলনা স্টাইলে গাজীপুরে হলে আমরাও দেখব, চেষ্টা করবো এটা প্রতিহত করার জন্য। এটা আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করব গাজীপুরে যাতে খুলনা স্টাইলে নির্বাচন করতে না পারে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, আমি স্বীকার করি যে, একমাত্র আইন-আদালত করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। তার একমাত্র পথ হলো রাজপথ। কোনো আন্দোলন ছাড়া জনগণের কোনো দাবি আদায় করা সম্ভবপর হয় নাই। যে পথে দাবি আদায় করা যাবে সেই পথ আমাদের বেঁছে নিতে হবে। রমজান মাসের পরে কঠোর কর্মসূচির পথ আমাদের সেই পথ বেঁছে নিতে হবে।

দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। আমি আশা করি, তিনি খালি হাতে ফিরবেন না। তিস্তা পানি বণ্টনের স্বাক্ষরিত চুক্তি হাতে নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসবেন।

সরকার ব্যর্থ হয়ে দেশে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করছেন বলে অভিযোগ করেন মওদুদ। তিনি বলেন, আজকে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। যাদের হত্যা করা হচ্ছে ওরা কারা? যাকে মারছে সে মাদক ব্যবসায়ী কি ব্যবসায়ী না- আপনি কী করে জানেন। কজনকে আপনি চিনেন। খবরের কাগজে দেখি এক হাজার দুই হাজার ইয়াবা পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে মৃত্যুর পরে দেখা গেল। এরা তো বাহক, এরা তো মালিক না। এরা তো নিয়ন্ত্রণ করে না। এরা অন্যের জন্য ব্যবসা করে সেটা বিক্রি করে ওই বসকে দেন। ওই বসরা কারা? এই সরকারের মদদপুষ্ঠ ব্যক্তিরা হলো এই মাদক ব্যবসার মালিক। আমি বলব, বিনা বিচারে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। মাদক ব্যবসা বন্ধ করুন। আমরা চাই, মাদক ব্যবসা একেবারে উচ্ছেদ হোক। মাদক চোরাই পথে আমদানি বন্ধ হোক।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও হুমায়ুন কবীর ব্যাপারীর সঞ্চালনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, কেন্দ্রীয় নেতা আবেদ রাজা ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫২৫ঘ.)