নানা রোগে আক্রান্ত

ঈদ-উল ফিতরের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় বিএনপি

ঈদ-উল ফিতরের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় বিএনপি

ঢাকা, ৩ জুন (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, জামিন নিয়ে কানামাছি খেলবেন না। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

রবিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

রিজভী আহমেদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও সরকারি কারসাজিতে জামিন আটকে দেয়া হয়েছে। হাইকোর্ট কোন মামলায় জামিন দেওয়ার পর আপিল বিভাগ কারও জামিন স্থগিত করে এমন নজির বাংলাদেশে আর একটিও নেই। মামলাগুলো নিম্ন আদালতেই জামিনযোগ্য, অথচ এতে প্রমাণিত হয় সরকার সকল স্বাধীন প্রতিষ্ঠানকে নিজের কব্জায় রেখেছে। আদালতের শরীর থেকে ন্যায়বিচারের আত্মা উধাও করে এটিকে একটি শূন্য কাঠামোতে পরিণত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে সরকার।

ভোটার শূন্য একটি নির্বাচন নিশ্চিত করতেই বেগম জিয়াকে বন্দী করে রাখা হয়েছে-অন্য কোন কারণে নয়। জনগণ কেবল একটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচনী তামাশা দেখার অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন বিএনপির এই নেতা।

‘এ ধরনের মহৎ অভিযানে দু একটি ভূল হতেই পারে’। ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতি উত্তরে রিজভী বলেন, এমন বক্তব্য মানবাধিকারকে ঠাট্টা করা। খুনী-সন্ত্রাসীদের ন্যায় বেআইনি হত্যাকে স্বীকৃতি দেয়া। কাউন্সিলর একরাম হত্যার অডিও শুনে, তাঁর স্ত্রী ও মেয়েদের কান্না শুনে শুধু বাংলাদেশের মানুষের বিবেকই নয়, বিশ্ববিবেককেও নাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু একরাম হত্যাই নয় এখন পর্যন্ত মাদক বিরোধী অভিযানের নামে প্রায় ১৩০ জনকে বিচারবহির্ভতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

গত ৪ মাসে ২৫০ জন মানুষকে বিচার বর্র্হিভূতভাবে হত্যা করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। যাদের বেশীরভাগই আবার তরুণ যুবক। তারা কে কতটুকু অপরাধের সাথে জড়িত সে সম্পর্কে জনগণকে অন্ধকারে রেখে বিনা বিচারে হত্যার পেছনে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। নিহত পরিবারগুলো শোকের সাগরে ভাসছে। মানুষের দুঃখ কষ্টকে নিয়ে যারা এমন মন্তব্য করতে পারে, তারাই অবৈধ ক্ষমতায় মশগুল থেকে মানবিক গুনাবলী হারিয়ে ফেলে।

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ড্রাগ চেইনের লিংক হিসেবে চুরি চোট্টামি করা ছিঁচকে কিছু মানুষসহ প্রমাণহীন আরো অজ্ঞাত অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা অভিযান চালানো হলেও চেইনের শীর্ষে বসে থাকা অমিত ক্ষমতাধর গডফাদার’রা বসে আছে কী করে? প্রশ্ন হচ্ছে সরবরাহের উৎস পথ আঁটকে যাচ্ছে না কেন? তাহলে কারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মাদক ঢুকতে সহায়তা করছে? রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া কী উৎসমুখ খোলা থাকে? কারণ এই উৎসমুখগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন বদিদের মতো এমপি’রা-প্রশাসনের সহায়তায়। বদিসহ ক্ষমতাসীনদের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কিভাবে এতগুলো গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে গেল জাতি তা জানতে চায়। সরকারই গডফাদারদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করছে।

আওয়ামী সরকার বাংলাদেশে ‘একটি এতিম জেনারেশন তৈরী করতে চায়।’ বে আইনী হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে সরকার তাদের টিকে থাকার সমাধান খোঁজে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে অন্যায়ের প্রতিশোধ প্রকৃতি নিজেই নেয়। একটি বেআইনী হত্যা আরো অনেক হত্যার বিস্তৃতি ঘটায়।

তিনি বলেন, মাদকের বিস্তার ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের সহায়তাকারী হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য। তাদের এ সাড়ে নয় বছরে মাদকে ছেয়ে গেছে দেশ।

জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪০০ঘ.)