যেকোনো সময় ডাক আসতে পারে: এমাজউদ্দিন আহম্মেদ

যেকোনো সময় ডাক আসতে পারে: এমাজউদ্দিন আহম্মেদ

ঢাকা, ৯ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : উচ্চ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতের প্রতিবাদে এবং তাঁর মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে প্রতীকী অনশনে সংহতি প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহম্মেদ। তিনি অনশনে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের প্রস্তত থাকতে বলেছেন। তিনি বলেন, যেকোনো সময় ডাক আসতে পারে।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর গুলিস্তানের ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।

বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। জেলা পর্যায়েও একই কর্মসূচি পালন করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারা দেশের জেলা সদরেও আজকের এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

এমাজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে যথেষ্ট যোগ্য ব্যক্তিরা আছেন। তারা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। হঠাৎ হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকার বিএনপিকে নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত উল্লেখ করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ভবিষ্যতে যে নির্বাচন আসবে, সে নির্বাচনে কী হয়, না হয় তা নিয়ে তাদের অনেক ভীত সন্ত্রস্ত মনোভাব। বাংলাদেশের বৃহত্তম দল বিএনপির দিকে তাদের সন্দেহের দৃষ্টি রয়েছে। এ সন্দেহ থেকে নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন অত্যাচার করা হচ্ছে। যতদিন এ ভীতি শেষ না হবে ততদিন দেশের স্বভাবিক অবস্থা হবে না। আওয়ামী লীগ তিন তিনবার দেশের গণতন্ত্রকে বিধ্বস্ত করেছে।

বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলে উল্লেখ করেন এমাজউদ্দিন আহম্মেদ।

তিনি বলেন, কারাগারে নেওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। তিনি যখন বেরিয়ে আসবেন তখন আমরা এক নতুন নেতৃত্বের সন্ধান পাব।

সকাল ৯টার আগ থেকে অনশনে যোগ দিতে বিএনপির হাজারো নেতা-কর্মী মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে হাজির হন। সেখানে মাদুর বিছিয়ে অনশনে বসেন তারা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখা যায়, অনশন কর্মসূচিতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন।

অনশন কর্মসূচি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের মা’ উল্লেখ করে তার অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অনশন স্থানের পেছনে বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ও তার মুক্তির দাবি জানিয়ে ব্যানার টাঙানো হয়েছে।

বিএনপির আজকের এই কর্মসূচি উপলক্ষে মহানগর নাট্যমঞ্চের চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশনে বসেছিল বিএনপি। ওই অনশন কর্মসূচি বিকেল চারটা পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ অনশন কর্মসূচিটি ভেঙে দেয়। পরে অনশন কর্মসূচির স্থান থেকে বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতা-কর্মীকে সাদাপোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

অনশন কর্মসূচিতে ২০-দলীয় জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।

২০-দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার ও জাগপার আসাদুর রহমান খান অনশনে সংহতি জানিয়েছেন।

অনশনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন, কবির মুরাদ, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। ওই দিন থেকে তিনি পুরান ঢাকার কারাগারে বন্দী।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৭০৭ঘ.)