ভল্টের ঘটনায় প্রমাণ হয় সরকার অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিচ্ছে: মির্জা আলমগীর

ভল্টের ঘটনায় প্রমাণ হয় সরকার অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিচ্ছে: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ১৮ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট কারসাজিতে প্রমাণ হয় সরকার দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিচ্ছে। সরকারের চরিত্র, লক্ষ্য সবার কাছে এখন পরিষ্কার দাবি করে মির্জা আলমগীর বলেন, দুর্নীতি কোনো পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে সোনা রাখার পর সেটা বদলে ধাতু জাতীয় জিনিস রাখা হয়েছে। অলঙ্কারগুলো বদলে সেখানে নকল জিনিস রাখা হয়েছে।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, এরআগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে টাকা লুট করা হলো। যার প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করতে পারেনি। অর্থমন্ত্রী বলছেন, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের হাত অনেক লম্বা। আপনি বারবার এই ধরনের লোকদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন, আশ্রয় দিচ্ছেন এবং সরকারের ইচ্ছা পূরণ করছেন। আর বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ ফোকলা করে দিচ্ছেন।

কোটা সংস্কার ও বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি কোনো রাজনীতি করছি না এমন দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউটার্ন করেছেন। কোটা নিয়ে হাইকোর্ট যা বলেছে সেটা রায় না পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।

মির্জা আলমগীর বলেন, বেকার যুবকদের যে ন্যায়সঙ্গত কোটা সংস্কারের আন্দোলন। কিন্তু রেগেমেগে সংসদে প্রধানমন্ত্রী বললেন- কোনো কোটাই থাকবে না। এখন আপনি বলছেন, হাইকোর্টের রায়ের বাইরে যাওয়া যাবে না। আদালত কি বলেছে? যা বলেছে কোটা নিয়ে সেটা রায় নয়, পর্যবেক্ষণ। এই কথাটা আমরা অনেকেই বলছি না। আপনি পর্যবেক্ষণকে অ্যাভোয়েট করলেন- ত্রয়োদশ সংশোধনী যেটা পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল হলো সেখান থেকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা আপনি রাখলেন। যেটা আপনার সুবিধা যেটাতে আদালতকে ব্যবহার করছেন আর যেটায় অসুবিধা সেখানে আদালতকে ব্যবহার করছেন না। পরিষ্কার করে বলতে চাই কোটা এবং বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো রাজনীতি করছি না। যেটা সত্য আমরা সেটা জনগণের কাছে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে তুলে ধরছি।

বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নোংরা রাজনীতি করছে- ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এই ধরনের কথা বলে তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক মামলায় রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য, আসন্ন নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য তারা কারারুদ্ধ করা হয়েছে। তাকে তার ন্যূনতম আইনি সুযোগ তিনি প্রাপ্য সেখান থেকে বঞ্ছিত করা হয়েছে। মূল মামলায় জামিন পেলেও এখন একটার পর একটা মিথ্যা মামলাকে সামনে এনে মুক্তিকে বিলম্ব করছে। তারা তাকে ততদিন পর্যন্ত কারাগারে রাখতে চায় যতক্ষণে তাদের অভিষ্ট লক্ষ্য পূরণ না হয়।

আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা যখন কারাগারে ছিলেন তখন কানের চিকিৎসার জন্য তিনি স্কয়ার হাসপাতালে যাননি? আপনাদের দলের নেতারা যারা কারাগারে ছিলেন তারা অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেননি। আমরা দাবি করছি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ককটেল হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বুলবুলের প্রচার মিটিংয়ের মধ্যে বোমা মারলো, এরপর সঙ্গে সঙ্গে হামলার পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে তারা বললো, এই এখন বিএনপি বলবে আমরা বোমা মেরেছি, কিন্তু আসলে আমরা মারিনি। এটা প্রমাণ করে আপনারাই এটা মেরেছেন, আপনারাই নির্বাচনকে বিতর্কিত করছেন। ঠাকুরঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’র মত অবস্থা হয়েছে।’ নির্বাচনের নামে খেলা খেলা, তামাশা চলছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এসময় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বিএনপির প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪৫৩ঘ.)