রসিকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি আজ্ঞাবহ ইসি : বিএনপি

রসিকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি আজ্ঞাবহ ইসি : বিএনপি

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সরকারের আজ্ঞাবহ আখ্যা দিয়ে বিএনপি বলেছে- ইসির ব্যর্থতার কারণে রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারেনি।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করে আরো বলেন, আমাদের জানামতে রসিক নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি অত্যন্ত কম। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সরকার নানাভাবে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করছে। তারই প্রতিফলন ঘটলো নির্বাচনে ভোটারদের টার্ন আউটের মধ্য দিয়ে। ভীতি ছড়িয়ে পড়ায় ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির হার একেবারেই কম। সকালেও কয়েক জায়গায় প্রশাসনের ব্যক্তিদের সহায়তায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর খবরও আমরা পেয়েছি। ভোটের আগের রাতে শহীদুল নামে বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতার করে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধামকিও দেখানো হয়েছে। পূর্বেই বলেছি-ভোট চুরি দুইভাবে হতে পারে-একটি হলো ভোট সন্ত্রাসের মাধ্যমে অন্যটি ভোট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে। রসিক নির্বাচনে দুই পদ্ধতিই প্রয়োগ করেছে ভোটারবিহীন সরকার।

বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকালে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রসিক নির্বাচনে বিএনপির পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মহাজোটের ক্যাডার এবং প্রশাসনের দায়িত্বরত সরকারদলীয়রা বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষের প্রার্থীর এজেন্টদেরকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। এমনকি ধানের শীষের প্রার্থী কাউসার জামান বাবলাকে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। আজ্ঞাবহ ইসির ব্যর্থতার কারণে রসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারেনি। নির্বাচন শুরুর পর থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম ও কেন্দ্র দখলে সেটিরই বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।

তিনি বলেন, ফতেপুর স্কুল এবং দেউডোবা ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। ভোট দিতে ব্যাপকভাবে বাধা দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এছাড়া কেল্লাবন্দ ভোট কেন্দ্রও সন্ত্রাসী কায়দায় দখলে নিয়ে কিছু সময় ব্যালটে সিল মারে। অন্য কেন্দ্রগুলোতেও বিএনপি সমর্থিত এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালটে সিল মারার খবর পাওয়া গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদ আজ সারাদিন নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করে প্রভাব বিস্তার করলেও ইসি চোখ বন্ধ রেখেছে। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় দায়িত্বরত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সহায়তায় সরকারের লোকেরা কারচুপির মাধ্যমে ব্যালটে সিল মেরে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করার আয়োজন করছে কী না সে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

রিজভী আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে অতীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বারবার রসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছি এবং ইসিকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবার আহবান জানিয়েছি। কিন্তু ইসি সরকারের ইশারায় ঠুঁটো জগন্নাথের মতো নীরবতা পালন করেছে। বিরোধী দলগুলোর ক্ষেত্রে ইসি বিমাতাসূলভ আচরণ করেছে।

তিনি বলেন, ইসি জানিয়েছে ১৯৩টির মধ্যে ১২৮টি ভোট কেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সংখ্যা আরো বেশি হলেও ইসি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বললেও ইসি তা করেনি। বরং সেখানে আনসার সদস্যের নামে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োগের নামে বেছে বেছে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের ক্যাডারদেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩১৫ঘ.)