সরকার এখন আতঙ্কে আছে: মোশাররফ

সরকার এখন আতঙ্কে আছে: মোশাররফ

ঢাকা, ৭ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘সরকার এখন আতঙ্কে আছে। যে কারণে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বাঁচার চেষ্টা চলেছে।’

খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, ‘বিরোধী দলগুলোর জাতীয় ঐক্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির শীর্ষ নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কারণে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জাতীয় ঐক্য-বিরোধী কথাবার্তা বলছেন।’

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের আয়োজনে ‘ষড়যন্ত্রের রাজনীতির অবসান এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ।

আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হাস্যকর, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র বাক্সবন্দি করেছে, তাদের নিয়ে কি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঐক্য সম্ভব? এ কারণেই জাতীয় ঐক্যে আওয়ামী লীগের থাকার কোনো সুযোগ নেই। বরং এই ঐক্য তাদের বিরুদ্ধেই।’

মোশাররফ বলেন, ‘সরকার আইন সংবিধান উপেক্ষা করে হিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করতেই বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে। তাকে চিকিৎসা না দিয়ে খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখন বিচারের নামে তাকে আরো সাজা দিতে কারাগারে আদালত বসিয়েছে।

বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মানসিক শক্তি খর্ব করতে না পেরে তাকে শারীরিকভাবে দুর্বল করার চক্রান্ত চলছে। দলীয় নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সঙ্গেও তাকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। যা ইচ্ছে, যতোদিন ইচ্ছে সাজা দিন। কিন্তু তিনি মানসিকভাবে দুর্বল হবেন না। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা আরো গুরুতর করতেই ষড়যন্ত্র চলছে। তাকে ও বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই সব ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। আর তাই এই ভোটবিহীন সরকারের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায়। একটি অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এ বাকশালী সরকারের অবসান চায় জনগণ। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়।’

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জনগণ এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। কোমলমতি শিশুরা রাস্তায় নেমে রায় দিয়েছে যে, তারা রাষ্ট্রের মেরামত চায়। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে গণতন্ত্রের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে।’

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের মেরামত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের যা বলা ও করার কথা, তা সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা করছেন। আগামী নির্বাচনে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি সকল দলের মধ্যে নীতিগত ঐক্য গঠিত হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই সরকারকে হটানো হবে।’

কারাগারে আদালত বসিয়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে মোশাররফ বলেন, ‘এটা প্রকাশ্য বিচার নয়। সিআরপিসির বিধান অনুযায়ী বিচার হতে হবে, উন্মুক্ত। তারা আইনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে কথা বলেন না। আর প্রধানমন্ত্রী বললেন, কারাগারের গেট নাকি খোলা ছিল। আবার জিয়াউর রহমান নাকি কারাগারেই আদালত বসিয়ে বিচার করেছিলেন। আর কত মিথ্যাচার করবেন আপনারা।?’

আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০ আসনের বেশি পাবে না। এ বিষয়ে গোয়েন্দাদের রিপোর্ট পাবার পর ক্ষমতাসীনদের মাথা খারাপ হয়েছে এমন মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, ‘সরকার এখন আতঙ্কে আছে। যে কারণে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বাঁচার চেষ্টা চলেছে।’

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়াম্যান সেলিনা রহমান, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ সভাপতি ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৩০ঘ.)