বৃহত্তর ঐক্য গড়ার পরামর্শ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের

বৃহত্তর ঐক্য গড়ার পরামর্শ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের

ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিকল্পধারা, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে গঠিত যুক্তফ্রন্ট এবং ড. কামাল হোসেনের গণফোরের সঙ্গে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানরা। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যানদের বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৭টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক চলে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে ১৫ জনের মতো ভাইস চেয়ারম্যান বক্তব্য রাখেন। প্রত্যকের বক্তব্যে ঘুরে ফিরে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য করার বিষয়টি উঠে আসে। এসময় সবাই বলেছেন, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করতে প্রয়োজন হলে আমাদের সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে হলেও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য করতে হবে। আর এটা হয়ে গেলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া সবাই বলেছেন, জাতীয় ঐক্য গড়ার জন্য স্থায়ী কমিটি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা ঠিক আছে।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আলোচনার মূখ্য বিষয় ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়া। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া, একটি নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করা এবং জাতীয় ঐক্যের জন্য চেষ্টা করা।’

এক প্রশ্নের জবাবে দুদু বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট ও ড.কামাল হোসেন যেসব বক্তব্য দিয়েছেন সেগুলো আমাদের বক্তব্য থেকে বেশি দূরে নয়। সুতারাং এখন চাইলে ঐক্য করা যায়।’

দুদু আরও বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সৃষ্টি করতে হবে সরকারকে। আমরা ৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে পারলে, কেন ৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যেতে পারবো না?’

ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ঐক্য এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।’

বৈঠকে উপস্থিত এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘ বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান কথা বলেছেন। মহাসচিব বলেছেন, সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছি আশা করি, জাতীয় ঐক্য হবে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও পজেটিভ।’

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, যদি জাতীয় ঐক্য নাও হয় তবুও বিএনপিকে তার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ আন্দোলন করে যেতে হবে। আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। সরকারকে কোনও প্রকার ছাড় দেওয়া যাবে না। গ্রেফতার এড়াতে আন্দোলনে আরও কৌশলী হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন শেষে পুলিশ যেভাবে সারা দেশে আটক করেছে এটার নিন্দা জানিয়েছি।’ ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্থায়ী কমিটি যেভাবে দল পরিচালনা করছে, এটাকে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন।’

সূত্র আরও জানায়, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচন নিয়ে দলের মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির নেতারা যেসব শর্ত দিয়েছে সেগুলোর বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যানরা একমত হয়েছেন।

দুজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘যুক্তফ্রন্টের আসন ছাড় দেওয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন তো হবে ৩০০ আসনে। এর মধ্য থেকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট এবং ঐক্যের মধ্য থাকা সব দলকে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে সবাইকে সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে বিএনপির।’

বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা কথা বলেননি বলে জানা গেছে।

(জাস্ট নিউজ/একে/১১০০ঘ.)