সরকারের নির্বাচন দরকার, ভোটের দরকার নেই: বিএনপি

সরকারের নির্বাচন দরকার, ভোটের দরকার নেই: বিএনপি

ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, সরকার জনগণকে ত্যাজ্য করে জালিয়াতির মেশিন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ওপর নির্ভরশীল হয়েছে। সরকারের নির্বাচন দরকার, কিন্তু ভোট দরকার নেই; গণতন্ত্রের মুখোশ দরকার, কিন্তু বিরোধী দলের দরকার নেই; গণমাধ্যম দরকার, কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতার দরকার নেই।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, পুনরায় ক্ষমতা লাভের কাড়াকাড়িতে ব্যস্ত সরকারের কাছে ইভিএম কেনা অত্যন্ত জরুরি এ জন্য যে, এই মেশিন ভোট গ্রহণের দিন ব্যবহার হলে ভোটারদের প্রয়োজন হবে না। ইভিএম নিয়ে বিশ্বময় অশান্তি ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তাড়াহুড়া করে বহুল আলোচিত ইভিএম কেনার জন্য তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। অন্যদিকে একনেকে এ প্রকল্প অনুমোদন হওয়ারও বেশ কিছুদিন আগে সরকারের দুজন কর্মকর্তা ইভিএম ক্রয় করতে বিদেশ গেছেন।

ইভিএম কেনার পেছনে সরকারের দুটি উদ্দেশ্য কাজ করছে মন্তব্য করে রিজভী আহমেদ বলেন, প্রথমটি হচ্ছে ভোটারবিহীন কারচুপির নির্বাচন, দ্বিতীয়টি হচ্ছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া।

সরকারদলীয়দের অর্থ আত্মসাতের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী জোট সরকার হরিলুটের সরকার। ব্রিজ, কালভার্ট, সড়ক-মহাসড়ক, উড়াল সেতুর নির্মাণে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধি করে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা জনগণের টাকা লোপাট করে যাচ্ছে। অবৈধ সরকার দলীয় লোকদের ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বানাতে রাষ্ট্রীয় অর্থভাণ্ডার ডাকাতির সুযোগ করে দিয়েছে বলে এ সময় দাবি করেন তিনি।

বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মামলা ও হয়রানির প্রসঙ্গ এনে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরো বলেন, ভোটারবিহীন সরকার নিজস্ব ভঙ্গিতে একটা অভিনব নির্বাচন করতে চাইছে। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা হবে, মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহার এমনকি ভোট গ্রহণের দিনও এসে পড়বে, শুধু ভোটকেন্দ্রে ভোটার থাকবে না। আর বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের থাকতে হবে কারাগারে অথবা পলাতক হয়ে। বর্তমান অবৈধ সরকার সব কাজ বাদ দিয়ে এখন একটা কাজই করছে, তা হলো দেশজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণমামলা ও গণগ্রেপ্তার।

পান থেকে চুন না খসলেও শুধু অজানা ভয়ে সরকারের পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আসলে আগামী নির্বাচন নিয়ে নেপথ্য লোকের বার্তাই হচ্ছে একতরফা নির্বাচন। আর সে জন্যই দেশব্যাপী বিএনপির নেতাকর্মীদের ছেঁকে তুলতে বিশাল জাল বিস্তার করা হয়েছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো আতঙ্কের আড়ালে নীরবে জনগণের সোচ্চার উচ্চারণ সংগঠিত হচ্ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এই আওয়াজ গণতন্ত্র বিনাশকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকবে। এ সময় তিনি নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান তিনি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫২৭ঘ.)