বয়স ১০৪, বেছে নিচ্ছেন স্বেচ্ছামৃত্যু

বয়স ১০৪, বেছে নিচ্ছেন স্বেচ্ছামৃত্যু

ঢাকা, ৩ মে (জাস্ট নিউজ) : দীর্ঘ জীবন সবার কাছেই অনেক প্রত্যাশিত। দীর্ঘ জীবন লাভের আশায় মানুষ কত কিছুই না করে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন থেকে শুরু করে অনেক কিছুই থাকে সে প্রচেষ্টার মধ্যে। কিন্তু মানুষ যদি বহু বছর বেঁচে থাকে, তা হলে নিজেই কি মৃত্যু কামনা করে?

দীর্ঘ জীবন থেকেও অনেকে পরিত্রাণ পেতে চান? সে রকম একজন হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানী ডেভিড গুডঅল। তার বয়স এখন ১০৪ বছর। গুডঅল এখন আর বেঁচে থাকতে চান না। সে জন্য স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে তিনি সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন।- খবর বিবিসি বাংলার।

গুডঅলের বয়স ১০৪ বছর হলেও তিনি এখনও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। কিন্তু তিনি মনে করছেন, এ বয়সে তার কোনো স্বাধীনতা নেই। অন্যের ওপর তাকে নির্ভর করতে হয়।

গত বছর জন্মদিন পালনের সময় গুডঅল বলেন, এ বয়স পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য আমি নিজেই অনুতপ্ত হচ্ছি। আমি ভালো নেই। আমি মরে যেতে চাই।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার একটি মাত্র রাজ্য ছাড়া অন্য কোথাও স্বেচ্ছামৃত্যুর বিধান নেই। এ বিষয়টিকে খুব বেদনাদায়ক বলে মনে করছেন ১০৪ বছর বয়সী গুডঅল।

সে জন্য স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য তিনি সুইজারল্যান্ডের একটি ক্লিনিকে যাচ্ছেন। লন্ডনে জন্ম নেয়া গুডঅল অস্ট্রেলিয়ার পার্থে একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন।

১৯৭৯ সালে তিনি পূর্ণকালীন কাজ থেকে অবসর নেন। কিন্তু এর পরও তিনি মাঠপর্যায়ের গবেষণার সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা বেতনে গবেষণা করতেন।

তার বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া এবং কাজ করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বলেছিল- বাসায় বসে কাজ করার জন্য। কিন্তু গুডঅল ১০২ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলার রায় তার পক্ষে আসে।

গুডঅল এ পর্যন্ত শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছেন। বেশি বয়স হয়ে যাওয়ায় গুডঅলকে গাড়ি চালানো ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি একসময় থিয়েটারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। কিন্তু বয়সের কারণে সেটিও তাকে ছাড়তে বাধ্য করা হয়। গুডঅলের স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নেয়ার পেছনে আরেকটি কারণ আছে।

গত বছর তিনি তার অ্যাপার্টমেন্টে পড়ে যান। এর পর দুদিন পর্যন্ত তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

চিকিৎসকরা বলেন, এমন অবস্থায় তার সেবা করার জন্য ২৪ ঘণ্টা একজনকে থাকতে হবে নতুবা তাকে একটি নার্সিং কেয়ারে স্থানান্তর করতে হবে।

কিন্তু তিনি সেটি চাননি। গুডঅলের সঙ্গে তার পুরনো বন্ধুদের এখন আর দেখা হয় না। চলাচল সীমিত হয়ে গেছে তার।

এমন অবস্থায় বেঁচে থাকার কোনো অর্থ খুঁজে পান না তিনি। তার মৃত্যুর সময় ঘনিষ্ঠ আত্নীয়রা পাশে থাকবেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬২২ঘ.)