প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঐক্যের আহবান

প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঐক্যের আহবান

ওয়াশিংটন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ৩১ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ): প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নেবার এক বছর পূর্তিতে তাঁর ভাষণটি খুবি তাৎপর্যপূর্ণ। নতুন এক যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যয় ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা সবাই এক দল, এক গোষ্ঠী আর একই পরিবারের সদস্য।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার রাতে ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে ট্রাম্প সব মত-পার্থক্য ভুলে যাবার আহবান জানিয়ে বলেন, আমি সবাইকে আহবান জানাই-আসুন আমাদের মত-পার্থক্যগুলো একপাশে সরিয়ে রাখি। যাদের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি তাদের সেবার জন্য একি প্লাটফর্মে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আজ রাতে অামি যে বিষয়টা নিয়ে কথা বলবো, সেটা হলো-আমরা কি ধরনের ভবিষ্যত পেতে যাচ্ছি, কি রকম জাতি হিসেবে নিজেদেরকে আমরা উপস্থাপন করবো। একসঙ্গে আমরা এক দল, এক গোষ্ঠী আর একই পরিবারের সদস্য।

ট্রাম্পের পুরো ভাষণ জুড়েই ছিলো ঐক্য আর সমঝোতা গড়ার আহবান।

ভাষণ চলাকালীন সময়ে শ্রোতাদের আসনে উপবিষ্ট অনেক ডেমোক্রেট সদস্য যৌননিপীড়নের শিকারদের সমর্থনে কালো পোশাক পরিধান করতে দেখা যায়, অভিভাসীদের সমর্থনে বাটারফ্লাই স্টিকার ব্যবহার করেন কেউ কেউ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও।

রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট উভয় দলকে বিরোধ ভুলে দেশপ্রেমে এক হবার আহবান জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমাদের জনগণের যা প্রাপ্য, অর্থনীতির জন্য যা প্রয়োজন, সেই নিরাপত্তা, দ্রুততা, নির্ভরযোগ্যতা এবং আধুনিক অবকাঠামো দেওয়ার বিষয়ে উভয় দলকে এক হওয়ার আহ্বান জানাই।

এক বছরে নিজ প্রশাসনের কাজের ফিরিস্তির মূল্যায়ন করে ট্রাম্প জানান তাঁর প্রশাসন অবিশ্বাস্য অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জন করেছে।

ট্রাম্প বলেন, এটা আমাদের জন্য নতুন সময়। আমাদের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর তৈরি হয়নি।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর থেকে প্রায় ২৪ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ কর্মসংস্থান শিল্প খাতে।

সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের গুরুত্বের কথা তোলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বলেন, উন্মুক্ত দেয়ালের জন্যই যুক্তরাষ্ট্রে মাদক আর সন্ত্রাস প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে। দেয়াল নির্মাণে অর্থায়নের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহবান জানান তিনি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র উদার হৃদয়ের দেশ। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার প্রথম, সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সব শিশু, খেটে খাওয়া শ্রমিক আর পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো।

ট্রাম্পের ভাষণে সতর্কবার্তা উঠে আসে ইরান এবং উত্তর কোরিয়া ইস‌্যুতেও। তিনি বলেন, ইরানে যে সব সাহসী নাগরিকরা স্বাধীনতার পক্ষে লড়ে যাচ্ছে তাদের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার কান্ডজ্ঞানহীন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যাসন্ন হুমকি।

আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরাশক্তি চীন-রাশিয়া প্রসঙ্গে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজির জরিপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন এবং রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ, অর্থনীতি এবং নীতি নির্ধারণি ইস‌্যুগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ।

বিতর্কিত গোয়ান্তানামাে বে কারাগার খোলা রাখার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র শক্তি সন্ত্রাসী আইএস গোষ্ঠীকে তাদের এলাকা থেকে হঠিয়ে দিতে শতভাগ সফল হয়েছে। সামনে আরো অনেক কাজ বাকি রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

(জাস্ট নিউজ/জিওয়াই/১৩১৫ঘ)