ঠাণ্ডা মাথার মাহমুদউল্লাহ, রেগে গেলে যা হয়...

ঠাণ্ডা মাথার মাহমুদউল্লাহ, রেগে গেলে যা হয়...

ঢাকা, ১৬ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশের ক্রিকেটে যাকে অত্যন্ত ঠাণ্ডা প্রকৃতির ক্রিকেটার হিসেবেই সবাই চিনেন। খেলার মাঠে উত্তেজিত হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ এমন দৃশ্য হয়তো এর আগে দেখেননি। সেই মাহমুদউল্লাহ বুঝালেন মাথা আসলে কতটা ঠাণ্ডা ছিল এ দিন। যেখানে এক রান হয়, সেখানে দুই এবং পরবর্তীতে ছক্কা! মুহূর্তেই দর্শকে ঠাসা প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। অবশেষে রাগের জবাব দিলেন ব্যাটে, দলকে নিয়ে গেলেন টি-টোয়েন্টির স্বপ্নের ফাইনালে। ১৮ বলে ৪৩ রানের বীরত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ।

হারের মুখে থেকে অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। শেষ চার বলে দরকার ১২ রান। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে মনে রাখার মতো এক জয় ছিনিয়ে নিল টাইগাররা। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে যখন ছক্কা হাঁকালেন রিযাদ, পুরো দল ছুটে এলো মাঠের মাঝখানে। শুরু হলো উৎসব। যেন বিরাট কোনো টুর্নামেন্ট জিতে ফেলেছে দল।

কি ঘটেছিল মাঠে?
ইনিংসের শেষ ওভারে পর পর দুটি বাউন্সার। একটিও ওয়াইড দিলেন না শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার! এর মধ্যে দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে গেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যেই হঠাৎ মাঠের পাশে নেমে এলেন সাকিব আল হাসান। একটু পরেই মাঠে জড়ো হলেন আরো কজন। মাঠে মাহমুদউল্লাহ উত্তেজিত কণ্ঠে কথা বলছেন আম্পায়ারদের সঙ্গে। মাঠ থেকে এর মধ্যে ব্যাটসম্যানদের চলে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছেন সাকিব। কী হচ্ছে মাঠে?

সব মিলিয়ে হজবরল অবস্থা। ৪ বলে ১২ রান দরকার, এমন অবস্থায় কি তবে ম্যাচ থেমে যাবে? শেষ ওভারে আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ কি আসলেই মাঠে ছেড়ে উঠে আসার ঘটনা ঘটাবে? তাহলে যে ডিসকোয়ালিফাইড হবে বাংলাদেশ। এই বিতর্ক গড়াবে আরও বহু দূর। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটেই ম্যাচ বয়কটের ঘটনা আছে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে, যেটি আজও আলোচিত হয়। শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কেও দাগ থেকে যেত সন্দেহ নেই।

কিন্তু মাথা ঠান্ডা করল দল। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ ব্যাট করতে পাঠালেন মাহমুদউল্লাহকে। সাকিবকে ঠেলেঠুলে ড্রেসিংরুমে পাঠানো হলো। আউট হয়ে সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাকিব। পায়ের প্যাড পর্যন্ত খোলেননি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভীষণ উত্তপ্ত।

ঝামেলাটা সৃষ্টি করেছেন শ্রীলঙ্কান আম্পায়ারই। লেগ আম্পায়ার দ্বিতীয় বাউন্সারকে নো-বল দেখিয়েছিলেন কিন্তু মূল আম্পায়ার সেটা অগ্রাহ্য করেছেন। ওই সময়ে একটি বাড়তি রান, বাড়তি বল ও ফ্রি হিটের মূল্য যে অপরিসীম। রিপ্লেতেও দেখা দ্বিতীয় বলটি প্রথম বাউন্সারেরও ওপর দিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশের রাগের কারণ ছিল, তবে সেটা সামলে মাঠে থাকাটাই শেষ পর্যন্ত কাজে লেগেছে। আজীবন গল্প করার মতো এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩৫৯ঘ.)