বাদ পড়া তাসকিন-সৌম্যদের পাশে মাশরাফি

বাদ পড়া তাসকিন-সৌম্যদের পাশে মাশরাফি

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবেই কাল জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়ছেন তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন ও কামরুল ইসলাম। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজা আজ বৃহস্পতিবার জানালেন, তাসকিন-সৌম্যরা যেন আবারো ফিরে আসেন, সব সহায়তাই তারা করবেন।

বিসিবির চুক্তি থেকে একসঙ্গে ছয় ক্রিকেটারের বাদ পড়াটা একটু ব্যতিক্রমই। তাদের বাদ পড়ার ব্যাখ্যা হিসেবে বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান বুধবার বলেছেন, এই ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স চুক্তিতে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর এক হোটেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসির সঙ্গে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে একসঙ্গে ছয় ক্রিকেটারের বাদ পড়া নিয়ে মাশরাফির কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল।

বিসিবির চুক্তিতে থাকা নিয়ে মাশরাফি প্রথমে নিজের ভাবনার কথাটাই বললেন, প্রথমত, যত দিন ধরে খেলছি, বেতনের ভেতর আছি কি নেই, এসব নিয়ে ভাবিনি। আমার কাছে এটা কখনোই পরিষ্কার নয়। আমার সব সময়ই প্যাশন ছিল ক্রিকেট খেলা। ওই প্যাশন নিয়ে ক্রিকেট খেলছি।

একজন খেলোয়াড়ের জীবনে বিসিবির চুক্তিতে থাকা, বেতনভুক্ত হওয়ার প্রভাব কতটা, সেটিও বললেন মাশরাফি, বেতন একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বেশির ভাগ খেলোয়াড় এসেছে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। পরিবারের ওপর বেতন বা তার খেলার বিরাট প্রভাব থাকে। তবে সিদ্ধান্তটা বোর্ডের। কজনকে বেতন দেবে না দেবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত।

একটা খেলোয়াড়ের জন্য বেতন (চুক্তিতে থাকা) গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে তাকে ততটুকু আবেগ দিয়েও খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস, সবাই সেভাবে খেলছে। পারফরম্যান্স সব সময়ই একই গ্রাফে চলে না। কারও কখনো ভালো যায়, কারও কখনো খারাপ। বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে পারফরম্যান্সের ওপর, এটাও সত্য।

বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়াটা একজন ক্রিকেটারের জন্য অবশ্যই বড় ধাক্কা। মাশরাফি জানালেন, বাদ পড়া ক্রিকেটাররা যেন এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে তারা সব সহযোগিতাই করবেন, তারা বাংলাদেশ দলের সত্যিকারের ভবিষ্যৎ, তাদের সমর্থন করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। আমার জায়গা থেকে আমি পিছপা হব না। যত প্রকার সমর্থন দেওয়ার তাদের দেব। জানি বাংলাদেশের এত বেশি বিকল্প খেলোয়াড় নেই। ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে যদি তারা ফর্মে ফিরে আসে, লম্বা সময় ধরে তারা বাংলাদেশকে সেবা দিতে পারবে। একসময় সাকিব-তামিম বা আমরা এমনই ছিলাম। বলতে পারেন, ওই সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটা ছিল না বলে আমরা টিকে গেছি। তাদের কাছে প্রত্যাশাটা অনেক। একটু খারাপ করলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সোচ্চার হয়ে ওঠে। ক্রিকেট খেলাটা এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে। ছোটখাটো বিষয়ে অনেক বেশি সমালোচনা হয়। ২২-২৩ বছর বয়সে এত সমালোচনা নিয়ে ধারাবাহিক ভালো খেলা অনেক চ্যালেঞ্জিং। কারও বেড়ে ওঠাও তো এত পেশাদারির মধ্যে হয় না। আমরা সিনিয়ররা যারা আছি, তাদের সহযোগিতা করব। তাদেরও চেষ্টা করতে হবে, তারা যেন নিজেদের সেরা ফর্মে আসতে পারে।

বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া মানে জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। চুক্তির বাইরে থেকেও খেলা যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সৌম্য, তাসকিন, সাব্বিরদের সামনে সে সুযোগ থাকছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে তাঁদের সামনে একটা পথই খোলা, ধারাবাহিক ভালো খেলা।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬২০ঘ.)