এতো শক্তি পান কোথায় মডরিচ?

এতো শক্তি পান কোথায় মডরিচ?

ঢাকা, ১৩ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : প্রশ্নটা অনেকের। লুকা মডরিচ ক্রোয়েশিয়া হয়ে যা খেলেন, যেভাবে খেলেন এতো শক্তি তিনি পান কোথায়! তাকে দেখলে মনে হয়, পুরো ৯০ মিনিট তিনি মাঠে দৌড়াতে পারবেন না। শরীরের ওজন পাখির মতো বলা যায়। চোখটা সর্বদা সাদা হয়েই থাকে। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে কঁচলালেও বোধ হয় ওই চোখে রক্তের চিহ্ন ফুটবে না। অন্য ফুটবলারদের তাও পিঠে, বাহুতে কিছু চর্বির দেখা মেলে। তার বাহু দুটিও তো লাউয়ের ডগার মতো সরু। অথচ এই মডরিচ ক্রোয়াশিয়ার হয়ে প্রায় প্রত্যেকটি সেকেন্ড মাঠে থেকেছেন।

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার সময় রোনালদো, ইসকো, ক্রুসরা তাও কিছুটা বিশ্রাম পেয়েছেন। কিন্তু কলুর বদলের মতো খেটেছেন লুকা মডরিচ। রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল জিতেই ক্রোয়েশিয়ার বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন পুরো দমে। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন।

এরপর গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে মাঠে নেমেছেন তিনি। খেলেছেন প্রায় শেষ পর্যন্ত। নকআউট পর্বে এসে আবার পরপর তিনটি ম্যাচ ১২০ মিনিট করে খেলতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার। অন্য খেলোয়াড় তাও বদলি হিসেবে বিশ্রাম নিয়ে খেলেছেন কিংবা দ্বিতীয়ার্ধে তুলে নিয়ে কোচ কিছুটা বিশ্রাম দিয়েছেন। অধিনায়ক লুকার সে সুযোগও হয়নি।

বিশ্বকাপে মিশনে যোগ দেবার আগে লুকা মডরিচ রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪৫ ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। এরপর বিশ্বকাপে দলের হয়ে খেলেছেন ছয় ম্যাচ। ফিফার হিসেব অনুযায়ী, এই ছয় ম্যাচে মডরিচ দৌড়েছেন ৬৫ কিলোমিটার। ম্যাচ প্রতি প্রায় ১১ কিলোমিটার করে। এর মধ্যে আবার বল পায়ে মডরিচ ২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।

অতিরিক্তি সময়েও তার কষ্ট হয়না! তার প্রমাণ তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দিয়েছেন ১১৪ মিনিটে ইংলিশদের দারুণ এক আক্রমণ প্রতিহত করে। ২-১ গোলের জয়ে পেরিসিচ-মানজুকিচের মতো অবদান তাই তারও কম না। আর তাতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে যায়।

লুকা মডরিচের হয়তো রোনালদোর মতো শারীরিক গঠন নেই। অন্যদের মতো গোলকরারও তার কাজ নয়। কিন্তু রোনালদোর মতো ৩৩ বছরের কাছাকাছি এসেও লুকা বেশ ভালোই জানেন কিভাবে নিজেকে ফিট রাখতে হয়। মাঠের কোথায় কোথায় অবস্থান নিয়ে খেলতে হয়। কখন বলের পেছনে ছুটতে হয় আর কোথায় কোথায় থামতে হয় তা মডরিচ বেশ জানেন। ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তুলে মডরিচ প্রমাণ করেছেন বয়স আসলে মাঠ দাপিয়ে খেলার জন্য কোন ব্যাপার না।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/১৯৫৬ঘ.)