আজ জিতলে কী করবেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট?

আজ জিতলে কী করবেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট?

ঢাকা, ১৫ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : কখনো তিনি গ্যালারিতে নেচে উঠেছেন, কখনো ঢুকে পড়েছেন দেশের ফুটবলারদের ড্রেসিংরুমে। আবার জয়োল্লাসে ফুটবলারদের সঙ্গে উদ্দাম নাচে মেতে উঠতেও দেখা গেছে তাকে। তিনি ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্রাবার কিটারোভিচ। মাঠের মদ্রিচ, এমবাপেরা যতটা জনপ্রিয়, গ্যালারির কিটোরাভিচও তার চেয়ে কিছু কম যান না। কারণ তার ফুটবলপ্রীতি। কারণ ফুটবলারদের সুখ-দুঃখে একাত্ম হয়ে যাওয়া। কারণ প্রেসিডেন্টের ‘বর্ম’ ছেড়ে শিশুর মতো উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার প্রবণতা। রবিবারের মহারণেও যে গ্যালারিতে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি রাকিতিচ, সুবাসিচদের তাতিয়ে দেবে, তা বলাই বাহুল্য।

কিটারোভিচ আদ্যন্ত ফুটবলপ্রেমী। ফুটবলের অন্ধ ভক্ত। আর তিনি যে বিশ্বকাপে বুঁদ, ন্যাটোর গুরুগম্ভীর সম্মেলনের ফাকেও বারবার তার প্রমাণ মিলেছে। কখনো বলেছেন, ফাইনালের শুরুর বাঁশি বাজার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছেন না। কখনো আবার সোজাসাপটা বলে দিয়েছেন, ‘‘রোববার আমরা জিতছিই।’’ এমনকী, ন্যাটোর সমাপ্তি ডিনারেও ব্রাসেলস থেকে আলোচনার বল ঠেলে দিয়েছেন মস্কোর দিকে। লুঝনিকি স্টেডিয়ামই যেন উঠে এসেছে ডিনার টেবিলে।

ফরাসি প্রেসিডেন্টকে মুখের উপরেই বলে দিয়েছেন, ‘‘ন্যাটোর সম্মেলন সফল হচ্ছেই, কারণ রবিবার আমরাই জিতছি।’’ এক সময় আবার নিজেই জানিয়েছেন, তিনি নিজেও ছোটবেলায় ফুটবল খেলেছেন। সফল হতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু ফুটবলের প্রতি তার ভালোবাসা, তার অন্তরের টান, এখনও সেই ছোটবেলার মতোই। সেই টানেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিজের দেশের জার্সি বিলিয়েছেন ন্যাটোর ফাঁকেই।

আর ফুটবলের মাঠে, (বলা ভাল গ্যালারিতে) ক্রোট প্রেসিডেন্ট বরাবরই স্বপ্রতিভ। তা সে সাজগোজে হোক, বা অভিব্যাক্তিতে। অধিকাংশ সময়ই গায়ে থাকে দেশের জার্সি। দলের খেলোয়াড়রা বিপক্ষ বক্সে ঢুকলেই তিনি ছটফট করতে থাকেন। আবার গোল খাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে তার চোখ-মুখই বলে দেয়, যেন পারলে নিজেই মাঠে নেমে পড়েন।

সেই আবেগ থেকেই দেশের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা খেটে হলেও যারা রাশিয়ায় যেতে চান, তাদের ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সর্বময় কর্ত্রীর এমন আবেগ উচ্ছ্বসিত কর্মকর্তারাও প্রাণপাত করেছেন। ভিসার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বারবার তদ্বির করেছেন। এমনকী, ফিফার কাছেও কিটারোভিচ নিজে অতিরিক্ত টিকিটের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় সেই আবদার মেটেনি। কিন্তু তাতে উৎসাহে এতটুকুও ভাঁটা পড়েনি। আর আগেই বলে দিয়েছেন, ফাইনালে হার-জিত যাই হোক, দেশের বীর সন্তানেরা বীরের মর্যাদাই পাবেন। জাগ্রেব বিমানবন্দর থেকে সিটি সেন্টার পর্যন্ত বিশাল শোভাযাত্রা করে ফুটবলারদের সংবর্ধনার আয়োজন সারা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।

ইতিহাসের সামনে দুই দেশ। ২০ বছর পর দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জয়ের মুখে ফ্রান্স। আর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে জিতলে প্রথমবারের জন্য বিশ্বকাপ ছোঁয়ার হাতছানি ক্রোটদের সামনে। ঐতিহাসিক এই ফুটবল যুদ্ধের সন্ধিক্ষণের অপেক্ষায় যেমন গোটা বিশ্ব, তেমনই নজর থাকবে গ্যালারিতে কিটারোভিচের প্রাণোচ্ছ্বল উপস্থিতির দিকেও। আর এখন থেকেই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে আজ মদ্রিচরা জিতলে তিনি কী করবেন, সেটা নিয়েও। অপেক্ষা শুধু রেফারির বাঁশির।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/১৯২৫ঘ.)