করোনার মধ্যে যুবলীগের হাজারও নেতা-কর্মীর সমাবেশ, ওসি প্রত্যাহার

করোনার মধ্যে যুবলীগের হাজারও নেতা-কর্মীর সমাবেশ, ওসি প্রত্যাহার

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক ও সামাজিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ হলেও সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বৃহস্পতিবার হাজারও নেতা-কর্মীর সমাবেশ ঘটায় উপজেলা যুবলীগ। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ এনে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, আগাম খবর জেনেও সমাবেশে বাধা দেয়নি পুলিশ বা উপজেলা প্রশাসন। সমালোচনার মুখে বেলকুচি থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলামকে রাতেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে যুবলীগ নেতা রেজা নিজেও হাজির ছিলেন। এত মানুষের সমাগমের ফলে করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় এলাকায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠেকানো তো দূরে থাক, সমাবেশ সফল করতে বেলকুচি থানা পুলিশের সদস্যরা বিশেষ করে ওসি আনোয়ারুল ইসলাম শুরু থেকেই যুবলীগ নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করেছেন।

বৃহস্পতিবারের সমাবেশের বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা জানান, ‘আমরা প্রথমে চালা এলাকায় মানববন্ধন করি। কিন্তু সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করায় লোকসংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫/৬ হাজারে পৌঁছে। পরে পার্টি অফিসের সামনে আমরা সমাবেশ করি।’

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান এ ধরনের মানববন্ধন ও সমাবেশের বিষয়ে কোনও প্রকার অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বরং বেলকুচি থানার ওসিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. একরামুল হক বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যে সব ধরনের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সাজ্জাদুল হক রেজা মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম করেছে।’

জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল বলেন, ‘এটা মনে হয় দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, ‘সাজ্জাদুল হক রেজা কতিপয় সন্ত্রাসীর মাধ্যমে তাঁত শ্রমিকদের টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনে এ ধরনের জমায়েত করেছে। পুলিশ বাধা দেয়নি। এ ধরনের জমায়েতের কারণে বেলকুচি উপজেলা জুড়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

এবিষয়ে বক্তব্য নিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ ও পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলমের সরকারি মুঠোফোনে শুক্রবার সকালে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।

বেলকুচির নবাগত ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নির্দেশে ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ এ প্রসঙ্গে মোবাইলে বলেন, ‘বেলকুচির ইউএনও বদলি হয়ে গেছেন। কামারখন্দের ইউএনও ভারপ্রাপ্ত হিসেবে থাকলেও বিষয়টি আগে থেকে অবগত ছিলেন না। বেলকুচিতে দলীয় লোকজনের মধ্যে যতই বিভাজন থাকুক না কেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তাদের এ ধরনের সমাগম করাটা মোটেও উচিত হয়নি।’ সুত্র: বাংলাট্রিবিউন।