দাম না পেয়ে নিজের পাকা ধানে আগুন দিলেন কৃষক

দাম না পেয়ে নিজের পাকা ধানে আগুন দিলেন কৃষক দাম না পেয়ে ক্ষোভে নিজের পাকা ধানে আগুন দিলেন কৃষক

টাঙ্গাইলে ধান কাটতে একজন শ্রমিককে মজুরি দিতে হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। সঙ্গে তিন বেলা খাবার। অথচ এই এলাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এত কম দামে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকের। তাই নিজের পাকা ধানে আগুন লাগিয়ে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের কৃষক আবদুল মালেক সিকদার।

কালিহাতী উপজেলার বানকিনা গ্রামে আবদুল মালেক সিকদারের বাড়ি। তিনি বলেন, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। ধান পেকে গেছে, ধান কাটতে শ্রমিকের খোঁজে গতকাল রবিবার গিয়েছিলেন রামপুর, এলেঙ্গা ও করটিয়া বাজারে। প্রতিটি জায়গাতেই ধানকাটা শ্রমিকেরা মজুরি চান এক হাজার টাকা করে। তার ওপর শর্ত দেন তিন বেলা তাদের পছন্দমতো খাবার খাওয়াতে হবে।

এমনিতেই ধানের উৎপাদক খরচ হয়েছে অনেক বেশি। বাজারে ধানের তেমন দাম নেই। এত চড়া দামে শ্রমিক এনে ধান কাটলে লোকসান আরো বেড়ে যাবে। তাই রাগে, ক্ষোভে পেট্রল কিনে নিজের জমিতে ফিরে আসেন মালেক সিকদার। জমির একাংশে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। আগুন দেখে আশপাশের জমিতে থাকা লোকজন ছুটে আসেন। তারা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। পাকা ধানে আগুন জ্বলার এ দৃশ্য উৎসাহী লোকজনের অনেকেই মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ধান খেতে আগুন দেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই কৃষক মালেকের বাড়িতে ভিড় করেন। তারা তাকে সমবেদনা জানান। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামও রবিবার রাতে মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা বলেন।

পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন ধানখেতে আগুন দেওয়ার ঘটনা বিষয়ে বলেন, ‘এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উচিত। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএম শহীদুল ইসলাম বলেন, কৃষি শ্রমিকের মজুরি অনেক বেশি হওয়ায় রাগে-ক্ষোভে আবদুল মালেক তার জমিতে আগুন লাগিয়েছিলেন।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ফলন অনেক বেড়েছে। কিছুদিন পড়েই ধান-চাল ক্রয় শুরু করবে সরকার। তাই ধান এখন বিক্রি না করে কিছুদিন পরে বিক্রি করলে আরো বেশি দাম পাওয়া যাবে।

এমআই