রংপুরের খোলা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়

দাম বাড়ায় রাতে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দেন কৃষকরা

দাম বাড়ায় রাতে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দেন কৃষকরা

যশোরের চৌগাছায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ তবুও কমছে না ঝাঁঝ। মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৭০/৮০ টাকা। থমকে গেছে টিসিবির খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি কর্মসূচি। গতকাল শুক্রবার চৌগাছা বড় কাঁচা বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় ক্রেতারা ভেবেছিল দাম কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু কেজি প্রতি দাম ৭০/৮০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপজেলার লস্করপুর, জাহাঙ্গীরপুর, গরীবপুর ও জামালতাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা নতুন পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন। বাজারে নতুন পেঁয়াজ ৫০ টাকা পোয়া, পুরাতন পেঁয়াজ ৭০ টাকা পোয়া বিক্রি হচ্ছে। এ সময় বাজারে নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা, লস্করপুর গ্রামের কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে আগাম জাতের কাট পেঁয়াজ লাগিয়ে ছিলাম। যার বয়স ৮০/৯০ দিন।

ফলন বিঘাপ্রতি ৪০/৪৫ মণ বর্তমান বাজারে ৭ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। পূর্ণ বয়স না হলেও বেশী দামে বিক্রি করতেই পেঁয়াজ তুলেছি। তিনি বলেন, দাম বেশী হওয়ায় রাতে পেঁয়াজের ক্ষেত পাহারা দিতে হচ্ছে। তাছাড়া এ পেঁয়াজ তুলে ঐ জমিতেই আবার গোল আলু লাগাবো।

আড়ৎ ব্যবসায়ী আশাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠেছে। কিন্তু দাম বেড়েই চলেছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৭০/৮০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার চৌগাছায় নতুন পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি। তবে নতুন এ পেঁয়াজ পুষ্ট না হওয়ায় বেশী দিন ঘরে রাখা যাবে না।

পৌর শহরের ইছাপুর গ্রামের দেওয়ান লবু রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গত শুক্রবারে পেঁয়াজ ১৪০ টাকা কেজি কিনেছিলাম। আজ ২৫০ টাকা কেজি। বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠলেও ঝাঁঝ কমেনি বরং বেড়েছে। জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এসে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি।

সর্বশেষ রাজধানীর মোড়ে মোড়ে ৩৫টি ট্রাক বসিয়ে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছিল। একজন ক্রেতা এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছিলেন আর ডিলার পাচ্ছিলেন প্রতি দিন এক টন করে। অর্থাৎ দিনে একটি ট্রাক থেকে প্রায় এক হাজারটি পরিবার পেঁয়াজ পাচ্ছিল। তবে চলতি সপ্তাহে মাত্র একদিন খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পেরেছেন এ সংস্থাটি।

এদিকে গত ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে বিএনপির সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি এ সময় বলেন, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তার মন্তব্যের পরও পেঁয়াজের কেজিতে বাড়লো ১০০ টাকা। চৌগাছা কাঁচা বাজারের আড়ৎ ব্যবসায়ী আহমেদ মল্লিক জানান, বর্তমানে চৌগাছা বাজারে নতুন আগাম জাতের কাট পেঁয়াজ পাইকারি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর পুরাতন পেঁয়াজ ২৩০ টাকা।

তিনি আরো জানান, আগে যেখানে প্রতিদিন তার আড়ৎ থেকে ২৫/৩০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হতো, সেখানে এখন ৫/৭ বস্তায় নেমে এসেছে। দিন দিন পেয়াঁজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বড়-বড় ব্যাপারিরাও পেঁয়াজ ক্রয় করছেন না।

এদিকে স্মরণকালের সকল রেকর্ড ছাপিয়ে রংপুরে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি অন্যদিকে গ্রাম অঞ্চলের হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা দরে। পিয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে পিয়াজের মজুতও প্রচুর তারপরও কেন দফায় দফায় দাম বাড়ছে তার কোন সদুত্তর মিলছে না ব্যবসায়ী আর আড়ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।