শিবগঞ্জে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় আমের সর্বনাশ

শিবগঞ্জে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় আমের সর্বনাশ

ঢাকা, ৮ মে (জাস্ট নিউজ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ৩২টি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ভাটার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন আমবাগানগুলির আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ আমবাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের।

জানাগেছে, শিবগঞ্জে যে সমস্ত ইটভাটা রয়েছে সেগুলিতে সরকারি বিধিবিধান মেনে না চলার কারণেই আম ও অন্যান্য ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আমবাগান মালিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভাটার পার্শ্ববর্তী এলাকার আমবাগানগুলি ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে আমের নিচের অংশ সরু হয়ে গেছে এবং আম আকারে ছোট হয়েছে। শুধু তাই নয় আমের গায়ে কালো দাগ হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে এসমস্ত আমবাগান গুলির মালিকেরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

এ আম নষ্টের বিষযে এক ভাটা মালিক জানায়, সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় গত দুবছর থেকে জিগজ্যাক চিমনির মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে ইট পোড়ানোর ব্যবস্থা করলেও ওইসব জিগজ্যাক পদ্ধতির ভাটার আশপাশের এলাকায় আম এবং অন্যান্য ফসলের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। আগের পদ্ধতিতে ১শ’ ২০ ফিট উঁচু চিমনি তৈরী করে যারা ভাটায় ইট পোড়াচ্ছে ওইসব এলাকার ক্ষতির পরিমাণ খুব কম। এ জিগজ্যাক পদ্ধতিতে তৈরী ইটভাটার মালিক কানসাটের ব্যবসায়ী আবু তালেব জানান, এ পদ্ধতির মাধ্যমে ইট পোড়ানো ভাল। তবে নিয়মনীতি না মানলে ক্ষতি হবে বেশি। জিগজ্যাক চিমনিতে ভাটার পার্শ্বে যে পানির ট্যাংকিতে পানি থাকার কথা, কিন্তু ভাটা মালিকেরা ওই ট্যাংকিতে পানি রাখে না।

কারণ হিসাবে অনেক ইট ভাটার মালিকেরাই বলেছেন ট্যাংকিতে পানি থাকলে ভাটার ধোঁয়া পানিতে পরিশোধিত হয়ে চিমনি দিয়ে উপরে উঠে। ফলে আম বা অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু পানি থাকলে ভাটায় জ্বালানি খরচ বেশি পড়ে এবং ভাটায় ইট পুড়ে কম। একারণেই ভাটা মালিকেরা ওই পদ্ধতি ব্যবহার করলেও নিয়মকানুন মেনে চলে না।

ইটভাটার ধোঁয়ায় আমসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতির ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরে রাজশাহী বিভাগের (বগুড়া অফিস) দায়িত্বরত পরিচালক আলী রেজা মজিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইটভাটায় আম ও ফসলের ক্ষতির অভিযোগ পেয়েছেন। রাজশাহী অফিসকে সরজমিনে দেখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ক্ষতির ব্যাপারে দায়-দায়িত্ব শুধু পরিবেশ অধিদপ্তরের একার নয়। ইটভাটা তৈরীর জন্য লাইসেন্স নেয়ার পূর্বে ৫-৬টি বিভাগের তদন্ত রিপোর্টের পরেই জেলা প্রশাসন তাদের লাইসেন্স দিয়ে থাকেন। যে সমস্ত দপ্তর সুপারিশ করেন তারা আদৌ সরজমিনে গিয়ে যাচাই বাছাই করে কিনা সন্দেহ রয়েছে। অবিলম্বে এব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন আমবাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২৫০ঘ.)