মরিচের ফলন ও দাম বেশি, কৃষক খুশি

মরিচের ফলন ও দাম বেশি, কৃষক খুশি

লালমনিরহাট, ২০ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের খেত আর আঙিনাজুড়ে এখন শুধু মরিচ আর মরিচ। অন্যান্য ফসলের তুলনায় মরিচের কিছুটা ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

কমলাবাড়ী এলাকার কৃষক রইচ উদ্দিন বলেন, `ধান আবাদ করে দাম পাই না। সবজি আবাদ করে দাম পাই না। যিডা আবাদ করব্যার যাই, খালি লোকসান খাই। সেই দিক থ্যাকে চিন্তা করলি এইবার মরিচের ভালোই দাম পাচ্চি। শুকনা মরিচ ছয় হাজার টেকা মণ দরে বেচিচ্চি। তবে খেতত থ্যাকে কাঁচা মরিচ ব্যাচপার য্যায়া দাম পাইনি। গতবার যে মরিচ ব্যাচনো আড়াই হাজার টেকা মণ দরে, সেই মরিচ এইবার ব্যাচিচ্চি বারো শ টেকা মণ।’

একই এলাকার আরেক কৃষক সাদ্দাম হোসেন বলেন, অনযের কাছ থেকে ৪০(শতক) জমি বর্গা নিয়ে কাচা মরিচ চাষ করে আশানুরোপ ফলন পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত মরিচ বিক্রি করে প্রায় দেড় লাখ টাকার মত পেয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন।

উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের খেত, বাড়ির উঠান আর আঙিনা এখন পাকা মরিচে উপচে পড়ছে। চলছে মরিচ শুকানোর ধুম। কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে কাঁচা অবস্থায় ৩০ মণ করে মরিচের ফলন হচ্ছে। শুকানোর পর বিঘাপ্রতি ফলন টিকছে ১০ থেকে ১২ মণ। খেত থেকে তুলেই প্রতি মণ মরিচ তিন হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করে বিঘাপ্রতি কৃষক পাচ্ছেন ৪০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ১২ মণ শুকনা মরিচ বিক্রি করে পাচ্ছেন ৮০ হাজার টাকা। অবশ্য এক বিঘা জমির মরিচ শুকাতে মজুরি বাবদ পাঁচ-ছয় হাজার টাকা খরচ হয়।

কৃষকেরা জানান, এবার খেত থেকে উঠানো পর্যন্ত এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে গড়ে ২৫-২৬ হাজার টাকা। এক মণ মরিচ খেত থেকে তোলার জন্য শ্রমিকদের মজুরি দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। হাটে নিতে পরিবহন বাবদ আরেক দফা খরচ হচ্ছে। সেই হিসাবে খেত থেকেই যাঁরা পাকা মরিচ বিক্রি করে দিচ্ছেন, তাঁদের খুব একটা লাভ টিকছে না। তবে যাঁরা শুকিয়ে বিক্রি করছেন, তাঁরা ভালো দাম পাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, এ বছর উপজেলায় একশ ৪০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষাবাদ হয়েছে।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এম,এম জামান শাহীন জানান, আদিতমারী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ভেলাবাড়ী ,কমলাবাড়ী ও সারপুকুর ইউনিয়নের কাঁচা মরিচের চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিশেষ করে কমলাবাড়ী ইউনিয়নের ব্যাপক হারে মরিচের চাষাবাদ হয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের ফলন বেশী ও দামও পাচ্ছেন এখানকার কৃষকরা বলে জানান তিনি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫৫০ঘ.)