স্কুলে ডেকে বাবাকে অপমান, ভিকারুননিসার ছাত্রীর আত্মহত্যা

স্কুলে ডেকে বাবাকে অপমান, ভিকারুননিসার ছাত্রীর আত্মহত্যা

ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নিজের সামনে বাবাকে অপমান করেছেন স্কুলের শিক্ষকরা। আর তা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়েছে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ভিকারুননিসা স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী(১৫)। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে শান্তিনগরের ৭ তলার বাসায় অরিত্রি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে বিকাল ৪টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী গণমাধ্যমকে বলেন, তার মেয়ের পরীক্ষা চলছে। রবিবার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে—এমন অভিযোগে অরিত্রিকে আজ সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়।

দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, আজ তিনি স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান। তার ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তারা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আগামীকাল মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়। দিলীপ অধিকারী বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। যেখানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যও ছিলেন। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন।

দিলীপ অধিকারী বলেন, এ সময় অরিত্রি দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে স্ত্রীসহ তিনি বাড়ি গিয়ে দেখেন অরিত্রি তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। অরিত্রিকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন তারা। পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।

পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, সুরতহাল করে অরিত্রির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যু কারণ জানা যাবে।

ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার গলায় দাগ ছিল। তার ‘নেক টিস্যু’ সংগ্রহ করা হয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

এদিকে অরিত্রির মৃত্যুর সংবাদ শুনে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ভিকারুননিসার প্রিন্সিপাল নাসরিন ফেরদৌস। সেখানে তিনি অরিত্রির স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় তারা প্রিন্সিপালের গাড়ি ঘিরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি দ্রুত হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।

এ ব্যাপারে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নাসরিন ফেরদৌসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে ফোন করতে বলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০৩৪ঘ.)