ডাকসু নির্বাচন: ভোটকেন্দ্র হলে নয় অনুষদে রাখার দাবি

ডাকসু নির্বাচন: ভোটকেন্দ্র হলে নয় অনুষদে রাখার দাবি

দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হলের ভেতরে না রেখে অনুষদে রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ফেডারেশন এ দাবি জানায়।

ডাকসু নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র, প্যানেল ভাবনাসহ নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারন সম্পাদক জাহিদ সুজন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক রেজা, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজীর, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক ইশতিয়াক, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির আবদুল্লাহ প্রমুখ।

জাহিদ সুজন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের রাতে গেস্টরুম করা, দিনে মিছিলে যাওয়া রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরা উপায়হীনভাবে এ কাজ করতে বাধ্য। গণরুম ও গেস্টরুম নির্যাতনে বিগত কয়েক বছরে অনেক শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে ডাকসু নির্বাচনের আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছি, কিন্তু সন্ত্রাস-দখলদারত্ব পরিপূর্ণ আবাসিক হলে ভোটকেন্দ্র রাখলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এটাই স্বাভাবিক। আমরা খুব জোর দিয়েই বলছি, আবাসিক হলের বিশেষ ভীতিজনক পরিস্থিতিতে অনুষদে ভোটকেন্দ্র নিতে আইনগত বা অন্য কোনো বাধা নেই। কোনো বাধা থাকলেও তা সংশোধন করার সুযোগ সবসময় থাকে। তাই আমরা ডাকসু নির্বাচনে- হলে নয়, অনুষদে ভোট কেন্দ্র চাই।’

সুজন বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে- হলে নয়, অনুষদে ভোটকেন্দ্র চাই’ এই আহ্বানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা তিনদিন পরীক্ষামূলকভাবে একটি হল, কলা, ব্যবসায় শিক্ষা ও চারুকলা অনুষদের বেশ কয়েকটি বিভাগের কয়েকশ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। হলে একচেটিয়া দখলদারত্ব ও ভীতিজনক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা ডাকসু নির্বাচনে অনুষদে ভোটকেন্দ্র করার পক্ষে জোরালো সমর্থন দেন।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের মতো দখলদার সংগঠনের বিপরীতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি বাদে আপামর ছাত্রসমাজ, প্রগতিশীল ছাত্র জোট, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য, আদিবাসী সংগঠনসমূহ, শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন আন্দোলনের কর্মী, সাংস্কৃতিক-সামাজিক-পাঠচক্র সংগঠন, ক্রীড়া পারদর্শী, বিতার্কিক, শিল্পীদের নিয়ে ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকারের পক্ষে বৃহত্তর ইউনিটি দরকার। সেই বৃহত্তর ইউনটি গড়তে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ডাকসু নির্বাচনে বৃহত্তর ইউনিটি থেকেই সব প্যানেল দেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছি। বৃহত্তর ইউনিটি তৈরি হলে সেখান থেকে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারাও ডাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা এ নির্বাচনকে স্বাগত জানাই। সারাদেশের মানুষের কাছে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য যা যা করা দরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তা করতে হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি একতরফা নির্বাচন আয়োজন করতে চায় তাহলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব কি না, তা পরবর্তী সময়ে বিবেচনা করতে হবে।’

এমআই