রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখে ববি’র ভিসির পদত্যাগ দাবি

রক্ত দিয়ে দেয়াল লিখে ববি’র ভিসির পদত্যাগ দাবি

ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বুধবার ছিলো নবম দিন। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের শরীর থেকে রক্ত দিয়ে দেয়ালে ভিসির প্রত্যাহারের দাবি লিখে ভিন্নতর ভাবে প্রতিবাদ করেছেন। এ সময় আন্দোলনরতরা ভিসি বিরোধী নানা শ্লোগান দিয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলেও পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্তে অনড় উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারোর কথায় পদত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি এমনটাই জানিয়েছেন।

ভিসি বলেন, শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম দিতেই পারে। তাতে আমার কিছু আসে যায়না। আমাকে প্রধানমন্ত্রী এই দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই যদি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বলেন-তবেই আমি পদত্যাগ করবো। আর নয়তো কোন আন্দোলনই আমাকে আমার দায়িত্ব থেকে সরাতে পারবে না।

উপাচার্য অভিযোগ করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তার পরেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কোন কারণ দেখছিনা। তাদের দিয়ে একটি গোষ্ঠি বা চক্র আন্দোলন করাচ্ছে। তাদের আন্দোলনে অর্থের যোগান দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলন করিয়ে ওই গোষ্ঠি ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। তাই ওই চক্রটিকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে লেখার জন্যও সাংবাদিকদের কাছে আহবান করেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রতিবাদ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক এক আলোচনা সভায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। ভিসি’র এ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ২৬ মার্চ বিকাল থেকেই আন্দোলন শুরু করেন। এরপর ২৮ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন। তবে হল ত্যাগের ঘোষণা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাই গত ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল হলের ডাইনিং বন্ধ করে দেন।

সর্বশেষ ভিসি’র পদত্যাগ দাবি করে গত ১ এপ্রিল জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভিসি’র পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় আন্দোলনরত ববি’র শিক্ষার্থীরা।

এমআই