সাত দিন পর ক্লাসে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

সাত দিন পর ক্লাসে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

ক্লাসে ফিরেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। একটানা আন্দোলন করে সাতদিন পর শনিবার তারা ক্লাসে ফিরে। ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের নবনিযুক্ত পরিচালককে অপসারণ ও সাবেকুন নাহার সনির নামে ছাত্রী হলের নামকরণ করাসহ ১৬ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিত আশ্বাস (নোটিশ) পাওয়ার পরই শিক্ষার্থীরা আজ ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।

লিখিত আশ্বাস অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের ১৬ দফা দাবির কয়েকটি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কয়েকটির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একাডেমিক কয়েকটি বিষয়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেবে কাউন্সিলকে অনুরোধ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আন্দোলনে অংশ নেয়া একজন বুয়েট শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত একটার পর তারা লিখিত আশ্বাসের ওই নোটিশ পান। পরে সবার সম্মতিতে শনিবার থেকেই ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

১৫ জুন ঈদের ছুটি শেষে বুয়েট খোলার দিন থেকেই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ওই আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে বৃহস্পতিবার বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে তাদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয়ে লিখিত আশ্বাস দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

শিক্ষার্থীদের ১৬ দফা দাবি ছিল: বুয়েট ফটক নির্মাণের জন্য সিভিল-আর্কিটেকচার বিভাগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন ও নকশার জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করার আনুষ্ঠানিক নোটিশ, নতুন নিয়োগ পাওয়া বিতর্কিত ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালককে অপসারণ করে শিক্ষার্থীবান্ধব কাউকে নিয়োগ, ২০০২ সালে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত বুয়েট ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের নামকরণ, ডাবল সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিটি পুনর্বহাল, আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত কাজগুলো দ্রুত সম্পাদন, সিয়াম-সাইফ সুইমিংপুল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য উপাচার্যের স্বাক্ষরে নোটিশ, নির্মাণাধীন টিএসসি ভবন ও ন্যাম ভবনের কাজ সম্পন্ন করা, নিয়মিত শিক্ষক মূল্যায়ন প্রোগ্রাম চালু করা, যাবতীয় লেনদেনে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তন, নির্বিচারে ক্যাম্পাসের গাছ কাটা বন্ধ করা ও যত গাছ কাটা হয়েছে উপাচার্যের উপস্থিতিতে তার দ্বিগুণ গাছ রোপণ, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল আইডি দেওয়া, ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই ব্যবস্থার উন্নয়ন, ব্যায়ামাগার আধুনিকায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উন্নয়ন এবং পরীক্ষার খাতায় রোল নম্বরের পরিবর্তে কোড সিস্টেম চালু।

এমজে/