চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য

ক্লাস নয়, কোচিংয়েই গুরুত্ব দেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষকরা

ক্লাস নয়, কোচিংয়েই গুরুত্ব দেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষকরা

সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। আইন করে দেওয়ার পরও রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষকদের কোচিং সেন্টারগুলো এখনো বহাল তবিয়তে বাণিজ্য করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, কবি নজরুল কলেজের একাধিক শিক্ষক এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। ক্লাস ঠিক ভাবে না নিয়ে কোচিংয়ের জন্য গুরুত্ব দেন শিক্ষকরা। মাঝে মাঝে কলেজের ক্লাসেও কোচিংয়ের ক্লাস চালিয়ে যান তারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাবস্থাপনা বিভাগের জাফর আহমেদ ও সিরাজুল রাসুল, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের আব্দুস সালাম ও মিজানুর রহমান (খণ্ডকালীন), ইংরেজি বিভাগের পুতুল চন্দ্র বর্মন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শাহানারা আক্তার ও ফারজানা আক্তার (খণ্ডকালীন), গণিত বিভাগের মহসীন মিয়া এ কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও অর্থনীতি বিভাগ, রসায়ন বিভাগের শিক্ষকরাও এর সাথে জড়িত আছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লক্ষীবাজারের ডিইউটি মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা গড়ে তুলেছে তাদের কোচিং বাণিজ্য কেন্দ্র। যেখানে পালাক্রমে চলে শিক্ষকদের প্রাইভেট পাঠদান। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে- কবি নজরুল কলেজের অনেক শিক্ষকই কোনো না কোনো কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছেন। ছোট্ট একটি ঘরে ১ ঘন্টায় ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ ঘন্টা করে মাসে ১২ দিন তাদের পড়ানো হয়। কোচিং ফি বাবদ মাসে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে তাদের। এমনও শিক্ষক রয়েছে যার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যায় না। ইনকোর্স মার্ক তাদের হাতে তাই বাধ্য হয়েই কোচিংয়ে পড়তে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষকরা ক্লাসের চেয়ে কোচিংয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হচ্ছে নাম মাত্র। তাই কোচিংয়ে পড়তে হচ্ছে। আর শিক্ষকের কাছে কোচিং না করলে পরীক্ষায় পাস করবো কি করে? বাংলা বিভাগে শিক্ষক থাকলেও ক্লাসে কোনো কোনো দিন শিক্ষকের দেখাও মেলে না বলে অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী।

ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ২য় বর্ষে মোট ক্লাস হয়েছে ৬ দিন। শিক্ষকরা ক্লাসে আসে না তদের ফোন দিয়ে ক্লাসে আনতে হয়। তারা কোচিং এ বেশি গুরুত্ব দেন। কিন্তু বিষয়টি অস্বীকার করেন বিভাগীয় প্রধান আলা উদ্দিন আল আজাদ।

ডিপার্টমেন্টে কোনো কাজে শিক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর বা অফিস সহকারীদের কাছে গেলে বাজে ব্যাবহারের শিকার হতে হয় এমন অভিযোগও করেন অর্থনীতি, দর্শন, বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক বিষয়ে কলেজ উপাধ্যক্ষ ড. খালেদা নাসরীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।