এমপির নির্দেশেই হামলার অভিযোগ

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইলেন ভিপি নুর

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইলেন ভিপি নুর

নিজের প্রাণনাশের শঙ্কাবোধ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাইলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ভিপি নুর বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আপনি বলেছেন যে সরকারের সমালোচনা করতে কোনো বাধা নেই, ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। আপনার কাছে জোরালো অনুরোধ, ভিন্নমতের মানুষের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার দলের নেতা-কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে কার্যকর করুন। আমার সংগঠনের নেতাকর্মীদের অযথা হয়রানি বন্ধ করুন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ওপর যারা বারবার হামলা করছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে আপনি দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে আমরা আশা করছি।’

গত ১৪ আগস্ট চর বিশ্বাস থেকে বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে ভিপি নুরুল হক নুরু ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হয়। এই হামলায় স্থানীয় সাংসদ,আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও পুলিশের সহযোগিতা ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুর বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি,চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও তারা আমাকে বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটি স্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, এ ঘটনা নিয়ে যাতে বাড়াবাড়ি না করা করি সেজন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে তারা।’

তিনি আরো বলেন,‘আমার ওপর হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় গলাচিপা পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতেও সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

‘এ হামলায় আমার আত্নীয় ও সমর্থকদের গ্রেপ্তারের হুমকিও দিয়েছে পুলিশ। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে নগ্ন হামলা চালালেও ওসি হামলার কথা অস্বীকার করেছেন,’ যোগ করেন ভিপি নুর।

দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে ভিপি নুর বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। আপনারা অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন। শুধুমাত্র অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণেই আমি ও ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা বারবার ক্ষমতাসীন দলের রোষানলের স্বীকার হয়েছি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছাড়াও ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে এ হামলার জন্য ভিপি নুর পটুয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ এস.এম শাহজাদা সাজু, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ, তার ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্য্যসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মীকে দায়ী করেছেন।ওই হামলায় ভিপি নুরসহ পাঁচজন আহত হন।

এমআই