‘ভিপি নুর হামলার শিকার হলে আমরা কেউ নিরাপদ নই’

‘ভিপি নুর হামলার শিকার হলে আমরা কেউ নিরাপদ নই’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হামলাকারীদের বিচার দাবির পাশাপাশি ভিপি নুরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধনে এসব দাবি করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ভিপি নুরের ওপর হামলাকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। হামলাকারীদের বিচার ও নুরের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানান তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এ পর্যন্ত ভিপি নুরের ওপর আটবার হামলা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি হামলার সঙ্গে সরকারদলীয় সমর্থকরা জড়িত ছিলেন।

হাসানুল বান্না নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ডাকসুর ভিপির ওপর হামলা হয়েছে। আপনারা জানেন কে বা কারা হামলা করেছে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।

মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি যদি হামলার শিকার হন, তা হলে আমরা কেউ নিরাপদ না। ভিপি নুর নিজ এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আমরাও আমাদের এলাকায় হামলার শিকার হতে পারি।

মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

হামলার বিষয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে নুর বলেন, গত ১৪ আগস্ট চরবিশ্বাস থেকে আমার বোনের বাড়ি দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে পটুয়াখালী-৩ এর সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা সাজুর নির্দেশে চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী, গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা হয়।

‘শাহিন শাহের ভাই নুরে আলম, লিটু পেদা, আব্বাস পেদা, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রণো, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উলানিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ফরিদ আহসান কচিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ আসিফ, ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ, তূর্যসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, স্টিলের পাইপ ও চাপাতি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।’

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু ভিপি বলেন, হামলায় প্রায় ২০-২৫ জনকে আহত, ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, দুটি ডিসএলআর ক্যামেরা ও ৮৯ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। হামলায় রবিউল, ইব্রাহিম, জাহিদ, রিয়াজ ও আমিসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হই।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা শুধু হামলা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, আমাকে চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করেছে। ডাক্তার সিটিস্ক্যান ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করার জন্য বরিশাল মেডিকেলে রেফার করলেও সন্ত্রাসীরা এবং পুলিশ আমাকে জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

বারবার হামলা প্রসঙ্গে নুর বলেন, এ পর্যন্ত আটবার ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছি। ভিপি হওয়ার আগে তিনবার (৩০ জুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে, ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি ও ১১ মার্চ রোকেয়া হলে) হামলার শিকার হয়েছি।

‘আর ভিপি হওয়ার পর পাঁচবার (১২ মার্চ টিএসসি, ২ এপ্রিল এসএম হল, ২৫ মে ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ২৬ মে বগুড়া ও ১৪ আগস্ট উলানিয়া) হামলার শিকার হই।’

তিনি বলেন, প্রতিবার প্রকাশ্যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটলে ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। পুলিশের নীরব ভূমিকা ছিল সন্ত্রাসীদের সহায়ক।

এমআই