ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে থমথমে চবি, অনির্দিষ্টকালের অবরোধ

ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে থমথমে চবি, অনির্দিষ্টকালের অবরোধ

মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সকালে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ (বিজয় গ্রুপ)। তারা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের পদত্যাগ দাবি করেছে। এ নিয়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে চবিতে।

অবরোধকে কেন্দ্র করে সকালে নগরের বটতলী রেল স্টেশনে অবস্থান করা বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দেয়া হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলের সকল শিক্ষক ও স্টাফ বাসের তালায় সুপারগ্লু লাগিয়ে দেওয়ায় পরিবহন দপ্তর থেকে কোনো বাস শহরে যেতে পারেনি। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে বিবাদমান দুটি গ্রুপ বিজয় ও সিএফসির মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে পাঁচজন আহত হয়।

আহতরা হলেন- ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মো. ইলিয়াছ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওবায়দুর রহমান লিমন, লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নিলয় হাসান, পরিসংখ্যান বিভাগের ১০-১১ বিভাগের মাহফুজুর রহমান, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রিয়াম রায় প্রান্ত।
বিবাদমান দুটি গ্রুপ হলো শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী সিএফসি ও বিজয়।

জানা গেছে, কিছুদিন আগে সোহরাওয়ার্দী হলে সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের রুম দখলে নেয় বিজয় গ্রুপের কর্মীরা। এ সময় তারা হল থেকে বিতাড়িত হয়।

পরে শনিবার রাতে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা তাদের রুম ফের দখলে নিলে দুগ্রুপে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিজয় গ্রুপকে সোহওয়ার্দী হল থেকে বিতাড়িত করে আলাওল হলের দিকে সিএফসি গ্রুপ ধাওয়া দেয়। এ সময় সিএফসি গ্রুপ আলাওলের সামনে অবস্থান নিলে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে বিজয় গ্রুপের নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম তারেকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নির্দেশে এই অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তাকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজনীতি করার মন মানসিকতা তার নেই। তার মতো একজন অছাত্রের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি কখনো সফল হবে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি এবং দ্রুত তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ইলিয়াস হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত এবং কিছুদিন আগে শাটল ট্রেনে পোস্টার লাগানোর কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় অস্ত্র ঠেকিয়ে নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিতেন। রাতে হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের অস্ত্র ঠেকালে তাকে প্রতিহত করা হয়। কমিটির শুরু থেকে তিনি ঝামেলা করে আসছেন। ইলিয়াস ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তাকে আমরা দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে রাতে সংঘর্ষ চলাকালে প্রক্টরিয়াল বডির কোনো সদস্যই ঘটনাস্থলে ছিল না। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।

এমআই