দাবি মেনে নিন, অন্যথায় ছাত্র-জনতা টেনে-হিঁচড়ে নামাবে: সরকারকে ভিপি নুর

দাবি মেনে নিন, অন্যথায় ছাত্র-জনতা টেনে-হিঁচড়ে নামাবে: সরকারকে ভিপি নুর

জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও জনতার দাবি মেনে নিতে এবং পদত্যাগ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

শনিবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) অপসারণের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে জাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আজকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, এই আন্দোলন সারা দেশের মানুষের নৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আপনারা আন্দোলন থামাতে পৈশাচিক হামলা করেছেন।

তিনি বলেন, আপনারা নৈতিকভাবে দুর্বল জায়গায় আছেন। আপনারা ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার দাবি মেনে নিন, পদত্যাগ করুন। অন্যথায় ছাত্র-জনতা শিক্ষাঙ্গন রক্ষার্থে আপনাদের টেনে-হিঁচড়ে নামাতে বাধ্য হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘এটা খুবই বিস্ময়কর দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থী যৌথভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমান হাজির করছে, তাদেরকে বাহবা না দিয়ে তাদেরকে মামলা-হামলা করে তাদের হয়রানি করছে। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দুর্নীতি করবে আবার যারা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদের মামলা-হামলার নির্দেশ দিবে আমরা তা মেনে নিতে পারি না।’

অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ আরো বলেন, ‘এই অবস্থা বিরাজমানের দায় সরকারের। কেননা, অভিযোগের পর সরকারের পক্ষ থেকেই তদন্ত করা উচিত ছিল কিন্তু সরকার তাদের সাপোর্ট দিয়ে আসছে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘যে ভিসি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলাকে গণঅভ্যুত্থান বলে এবং ভিসি পক্ষের কিছু শিক্ষক দুর্নীতি আড়াল করতে ছাত্রলীগকে ইঙ্গিত করে আমাদের মারতে, পুলিশকে নির্দেশ দেয় আমাদের হামলা করতে আমাদের গ্রেপ্তার করতে তাছাড়াও কর্মচারী দ্বারাও আমাদের ওপর হামলা করেন তাহলে আমরা কতটুকু নিরাপদ? কতটা নির্লজ্জ হলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সমস্ত তথ্য-প্রমাণের পরও পদত্যাগ না করে উল্টা দায় এড়াতে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যতদিন পর্যন্ত ভিসিকে অপসারণ করা না হবে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।’

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটছে তা খুবই কলঙ্কজনক। এইভাবে দুর্নীতি ও অনিয়মের মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। আমরাও বসে থাকতে পারি না এমন দুর্নীতি ও অন্যায় দেখে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত করতে আমরা একত্রিত হয়েছি এবং মুক্ত করব। সঙ্গত কারণে আমরা মনে করি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচানোর জন্য সরকার এগিয়ে আসা উচিত। আমরা অনেকাংশে হতাশ হয়েছি দুর্নীতিবাজ ভিসির পক্ষে সরকারের অবস্থা দেখে। একটি দেশের জন্য এটি কলঙ্কজনক। অতিদ্রুত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপসারণ করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে সরকারের নিকট আহ্বান জানাই।’