জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

র‍্যাগিংয়ের জন্য মায়ের সামনে থেকে ডেকে নেয়া হয় মেয়েকে!

র‍্যাগিংয়ের জন্য মায়ের সামনে থেকে ডেকে নেয়া হয় মেয়েকে!

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ের খোঁজখবর নিতে মা এসেছিলেন ছাত্রীবাসে। তার সামনে থেকে ডেকে নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী লিয়োনাকে র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করে সিনিয়র ছাত্রীরা। নির্যাতনে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। ইমরান নামে আরেক শিক্ষার্থীও র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে বর্তমানে মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে, র‍্যাগিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রক্টর জানান, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্যাতিত ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার সামনে বলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসছো ভিসির নাম জানো না। ইংরেজিতে বানান করো। তুমি এই ড্রেস পরেছো কেনো? বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতনের করেছে। ডেকে নেওয়ার ১ ঘণ্টা পর যখন আমার মেয়ে ফিরেছে চোখের নিচ থেকে রক্ত পড়ছে মুখ থেকে ফেনা বের হয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে মেয়ে আমার।’

নিজের সামনে থেকে ডেকে নিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া নিজ মেয়েকে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করা হয়। সে ঘটনা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা সুলতানা জাফরিন নিগার। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোচ্চার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে, রোববার সকালে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দেন শিক্ষকরাও।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আল জাবির বলেন, ‘দোষীদের যেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হয়। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধ হয়।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জল কুমার প্রধান বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে আসার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্যের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের ফারহানা রহমান লিয়োনা ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরানকে আচরণ শেখানোর নামে র্যাগিং করা হয়। এতে প্রচন্ড মানসিক চাপে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়।