ফের ছাত্রলীগ কর্মীদের পিটুনিতে রক্তাক্ত ঢাবি ছাত্র

ফের ছাত্রলীগ কর্মীদের পিটুনিতে রক্তাক্ত ঢাবি ছাত্র

ঢাবি, ৯ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এক ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে সাত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের মধ্যেই একই ধরনের ঘটনা ঘটল অন্য একটি হলে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ফজলুল হক মুসলিম হলে সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার আলীকে পিটিয়েছে এক দল। এই ঘটনার জন্যও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরকে দায়ী করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মারধরের এক পর্যায়ে কাওসারের নাক থেকে রক্তক্ষরণ হয়, বমিও হয় কয়েক দফা। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

হলের ছাত্ররা জানান, কাওসারকে মারধর করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক অলিপ হাসান অভি (মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, চতুর্থ বর্ষ), দপ্তর সম্পাদক এনায়েত করিম (পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, চতুর্থ বর্ষ) সহ বেশ কয়েকজন। যারা এই মারধর করেছেন, তারা সবাই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিমের অনুসারী বলেও জানিয়েছেন কাওসারের সহপাঠী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, হলটিতে আসন সংকটের কারণে হলের বিভিন্ন দেয়ালে আসন চেয়ে বিভিন্ন দাবির কথা লেখে গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় শিশিমের অনুসারীরা কাউসারকে অভিযুক্ত করে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে অতিথি কক্ষে নিয়ে আসে।

কিন্তু কাউসার ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতারা তাকে মারধর করে। তার অবস্থা খারাপ হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে হলে নিয়ে আসে। হলে আনার কাওসার আবার বমি করলে তাকে আবার হাসপাতালে নেয়া হয়।

কাউসারের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলে একজন ফোন ধরে বলেন, ‘তিনি গুরুতর অসুস্থ, কথা বলতে পারবেন না।’

জানতে চাইলে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিম বলেন, ‘কাউসার নামের এক শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। তবে কেন ভর্তি হয়েছে আমি জানি না। তাকে কেউ মেরেছে কিনা আমি জানি না।'

ছেলেটি তো ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি-এমন তথ্য জানানোর পর সিসিম বলেন, ‘তাকে জোর করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তেমন কিছু হয়নি।...দুই তিনদিনের মধ্যে সে ভাল হয়ে যাবে।’

এই ঘটনায় হল প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা সম্ভব হয়নি। হলের প্রাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান তার ফোন বন্ধ রেখেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না। এখনি খোঁজ নিচ্ছি।’

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুককে ধার দেয়া ক্যালকুলেটর ফেরত চেয়ে বেদম মারধরের শিকার হন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এহসান রফিক। এই ঘটনায় ওমর ফারুক, হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আরিফুল ইসলাম এবং আরও পাঁচ ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৪০৫ঘ.)