হল ছাড়ছেন না জাবি শিক্ষার্থীরা, বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবি

হল ছাড়ছেন না জাবি শিক্ষার্থীরা, বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবি

দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পরও আবাসিক হল না ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হল ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এসব দাবি জানান। এর আগে গত রোববার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে তালা ভেঙে হলে ওঠা শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। নির্ধারিত সময়ে হল না ছাড়ায় দুপুর ১২টার দিকে ছেলেদের ৮টি হলে যান হলের প্রাধ্যক্ষসহ হল প্রশাসন। তারা শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন।

এ নির্দেশের প্রতিবাদে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এই হলের তালা ভেঙে ফেলেন। পরে বঙ্গমাতা হলের আবাসিক ছাত্রীরা হলে উঠে যান।

সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা আবার পরিবহন চত্বরে ফিরে যান। এরপর দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও ২৪ মে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের করা অন্য দাবিগুলো হলো—যেসব শিক্ষার্থী হলে উঠেছেন তাঁদের কোনোভাবেই হল থেকে বের করার চেষ্টা করা যাবে না, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং হামলায় ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, এই হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর ইন্ধন থাকলে তা তদন্ত করা, অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে যে মামলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করেছে, তা তুলে নিয়ে চিহ্নিত ব্যক্তিদের নামে মামলা করা।

এসব দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাই। তবে জাহাঙ্গীরনগরের পরিস্থিতি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো না। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসসংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর এসব এলাকা শিক্ষার্থীদের জন্য আর নিরাপদ নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা হলে অবস্থানের সিদ্ধান্তে অটল আছি।’

শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়লে বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো রেজিস্ট্রার ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল টিমের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপাচার্য ফারজানা ইসলাম অনলাইনে অংশ নেন। সভা শেষে আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষরা হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার আহ্বান জানান।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুজিবর রহমান বলেন, সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হবে এবং ১৭ মে আবাসিক হল খুলবে। এর আগে কোনোভাবেই শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবে না। শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।