ভিকারুননিসার স্কুল ড্রেস নিয়ে একচ্ছত্র ব্যবসা, জরিমানা, সতর্কতা

ভিকারুননিসার স্কুল ড্রেস নিয়ে একচ্ছত্র ব্যবসা, জরিমানা, সতর্কতা

শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস সরবরাহে আর কোনো প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘ সময় ধরে একচ্ছত্রভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে পারবে না রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষার্থীদের পোশাক বানানো সংক্রান্ত এক মামলায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষকে প্রতিযোগিতামূলক বাজার মানার আদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

বুধবার প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরির লক্ষ্যে স্বপ্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের করা এক মামলায় এ রায় দেয়া হয়। ভিকারুননিসার বিরুদ্ধে করা এই মামলাটি ২০১৮ সালে কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করেছিল।

আদেশ অনুযায়ী, একক প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে প্রত্যেক ক্যাম্পাসের জন্য ন্যূনতম ৩টি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক বানাতে হবে। এই বাছাই কার্যক্রমে দর্জির দোকান নির্বাচনের জন্য দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এর আগে স্কুলের পোশাক, রং, নকশা, মনোগ্রাম ও দাম সম্পর্কে অভিভাবকদের জানাতে হবে। এরপর মনোনীত পোশাক নির্বাচিত তিনটি দর্জি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দিতে হবে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীদের পোশাক তৈরির একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ দিয়েছিল। অভিযোগ ছিল, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে ওই টেইলার্স থেকে শিক্ষার্থীদের পোশাক বানানো বাধ্যতামূলক ছিল।

অন্য কোনো টেইলার্স থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা পোশাক বানাতে পারবে না। যা প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির জন্য অন্তরায় এবং প্রতিযোগিতা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মামলার আদেশে বলা হয়েছে, এই মামলায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিযোগিতা আইনের ধারা ১৫-এর উপ-ধারা ১-এর বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে। রায়ে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহীম মোল্লাকে ৭৯ হাজার ৮৯৭ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য আ ফ ম মনজুর কাদির বলেন, ‘অভিযোগ ছিল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের পোশাক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বানাতে হতো। এটি প্রতিযোগিতামূলক করতে রায় দেয়া হয়েছে। অভিভাবকেরা যাতে তাদের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান বা জায়গা থেকে পোশাক তৈরি করতে পারেন, সেজন্য এই রায় দেয়া হয়েছে।

মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ জানায়, ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর ১২-১৩ হাজার পোশাক বানাতে হয়। প্রতিষ্ঠানটির কারখানা পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীতে। তবে কোনো কার্যালয় নেই। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য ৭৫০-৮৫০ টাকা, ষষ্ঠ-দশম শ্রেণির ১,২০০ টাকা এবং উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পোশাকের দাম ১,৪০০ টাকা রাখা হয়।

মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ইব্রাহিম মোল্লার দাবি, ২০০৩ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে দরপত্রের মাধ্যমে তিনি ভিকারুননিসা স্কুলের পোশাক তৈরির কাজ পান। এরপর আর দরপত্র হয়নি। তবে তিনি এই কাজ প্রতিবছর পাচ্ছিলেন।