বাকস্বাধীনতায় চরম আঘাত

ঢাবি শিক্ষক মোর্শেদ হাসান খানকে অব্যাহতি

ঢাবি শিক্ষক মোর্শেদ হাসান খানকে অব্যাহতি

ঢাকা, ২ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয় সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

সোমবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে অব্যাহতি দেয়। তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনেছিল সরকার দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।

অব্যাহতি চেয়ে সংগঠনটি ক্যাম্পাসে ওই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিক্ষোভ ও ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে তারা। অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ড থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি আগামী সিন্ডিকেটে তোলা হবে।

গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে একটি জাতীয় দৈনিকে অধ্যাপক মোর্শেদের লেখা ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। যেখানে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে যখন পাক-হানাদার বাহিনী এ দেশের নিরীহ, নিরপরাধ ও ঘুমন্ত মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে, তখন তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ কিংবা প্রতিরোধের লেশমাত্র পাওয়া যায়নি। আর মানুষ এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না। ফলে বিনা প্রতিবাদে ও বিনা বাধায় ঝরে যায় মূল্যবান জীবন ও বিনষ্ট হয় অনেক সম্পদ। এমনি এক পরিস্থিতির মাঝে আওয়ামী নেতাদের বেশির ভাগই তাদের পরিবার-পরিজনসহ ভারতে চলে গেলেন, এ দেশবাসীকে মৃত্যুর ফাঁদে ফেলে দিয়ে। নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ মুক্তির স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও। জাতির এই সঙ্কটকালীন মুহূর্তে ত্রাতারূপে আবির্ভূত হন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত এই টগবগে যুবকের কণ্ঠে ২৬ মার্চ রাতে বর্জের মতো গর্জে ওঠে স্বাধীনতার ঘোষণা।’

ওই নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করা ও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেন। তারা ওই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা পোড়ান এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরদিন তারা অধ্যাপক মোর্শেদকে বরখাস্ত করার দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেন। ওই সময় উপাচার্য দেশের বাইরে থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বলেছিলেন, তিনি দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। উপাচার্য দেশে ফেরার পর সোমবার এ সিদ্ধান্ত এল।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০২৬ঘ.)