চাঁদা না দেয়ায় ঈশ্বরদী কলেজ অধ্যক্ষকে ‘ছাত্রলীগের মারধর’

চাঁদা না দেয়ায় ঈশ্বরদী কলেজ অধ্যক্ষকে ‘ছাত্রলীগের মারধর’

পাবনা, ৩০ জুন (জাস্ট নিউজ) : অনিয়ম-দুর্নীতিতে বাধা এবং চাঁদা না দেওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে মারধরসহ শিক্ষকদের আটকে রেখে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ নেতারা। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি ও সাধারণ সম্পাদক সুমন দাসসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় ছাত্রলীগের ৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুরালী মোহন অভিযোগ করেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি ও সাধারণ সম্পাদক সুমন দাসসহ স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষকে মারধর করেছেন। স্যারের রুমে ভাংচুর চালিয়েছেন।

অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা তুলে ধরে কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল বলেন, ছাত্রলীগ নেতারা কলেজের প্রসপেক্টাস ও পাঠ্যসূচি মুদ্রিত করে নিয়ে এসে কলেজ কর্তৃপক্ষকে দিয়ে বিক্রি করাতে বাধ্য করান। বিক্রির পর সব টাকা তারা গুণ্ডাদের মতো এসে নিয়ে যান। আমরা এ কাজের বিরোধিতা করলেই আমাদের ওপর নির্যাতন নেমে আসে। তারা ছয় ঘণ্টা ধরে আমাদের মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করেন। অধ্যক্ষ সারের গায়ে হাত তুলতে নিষেধ করায় তারা আমার গলা ধরে নিঃশাস বন্ধ করে দেওয়ার উপক্রম করেন।

শিক্ষকরা বলেন, অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে প্রথমে তারা সিসিটিভি ভাংচুর করেন। তারপর টেবিলের কাচসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। অধ্যক্ষসহ উপস্থিত শিক্ষকদের মারধর ও অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ আব্দুস সবুর খান মামলা করেছেন।

অধ্যক্ষ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, জীবনের নিরাপত্তাহীনতা, চাঁদাবাজি ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি করেছি। আমি কোনো প্রকার অন্যায় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নেই। তবে ছাত্রলীগ নেতারা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি বলেন, উচ্চস্বরে বাগবিতণ্ডার কথা স্বীকার করলেও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে কথা বলার সময় স্যারদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। শিক্ষকরা যদি এ ধরনের অপকর্ম করতেই থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে যাব।

ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার আরমান বলেন, স্যাররা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি করে। সম্প্রতি ভর্তি ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছিল। আমরা এর প্রতিবাদ করলে শিক্ষকরা আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং সামান্য কথাকাটাকাটি হয়। এখানে চাঁদা দাবির তো কোনো প্রশ্নই আসে না। এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৫০ঘ.)