রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ‘হাতুড়ি’ তাণ্ডব

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ‘হাতুড়ি’ তাণ্ডব হাতুড়ি হাতে ছেলেটি আব্দুল্লাহ আল মামুন। ছবি : সংগৃহীত

রাবি, ৬ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : হাতুড়ি হাতে নিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দৌঁড়ানো এই ছেলের নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক। গত মঙ্গলবার এভাবে সামনে গিয়ে মামুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের শরীরে পেঁরেক ঠুঁকে দেওয়ার মতো করে হাতুড়ি পেটা করেছেন। সেই হাতুড়ি পেটায় ওই ছাত্রের পায়ের হাড় ভেঙে গেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই নির্মতার পক্ষে সাফাই গাইছেন। তারা এখানে ভিন্ন দলের রাজনীতির গন্ধ শুকে মামুনের সব কিছুর বৈধতা দিতে চাইছেন, যা সভ্য সমাজে ধিক্কারের দাবি রাখে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলামিক নামের তরুণ রাজশাহী বিদ্যালয়ের স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। তার বাড়ি গাইবান্ধায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে তরিকুল দ্বিতীয়।

তরিকুলের অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এমএকে শামসুদ্দিন জানান, তার ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। চার সপ্তাহ পায়ের প্লাস্টার রাখা হবে। তার সারা শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। এখন সম্পূর্ণ বিশ্রাম দরকার তার।

সেদিনের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তরিকুল বলেন, পূর্ব ঘোষিত পতাকা মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন। মেইন গেটের সামনে গিয়ে দেখেন গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গেটের সামনেই একটি জটলা ছিল। পুলিশ তাদের ঘিরে রেখেছিল।

তরিকুল বলেন, জটলা করে থাকা ছাত্রদের আন্দোলনকারী ভেবে সামনে গিয়ে দেখি ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তারা আমাদের ধাওয়া করে। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ধরে ফেলে ওরা। এর পরই ঘিরে ধরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পেটাতে শুরু করে। এসময় কেউ একজন বাঁশের লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। সারা শরীরে কত মার পড়েছে আর স্মরণ করতে পারছিলেন না তিনি। মারের চোটে রাস্তায় পড়ে যাই... চিৎকার করে ওদের থামতে বলছিলাম। কিন্তু আর উঠে দাড়াতে পারিনি।

তিনি জানান, এর পরই কেউ একজন ভারি কিছু দিয়ে তার ডান পায়ে আর পিঠে আঘাত করতে শুরু করে। ওটা লাঠি মনে হচ্ছিল না। ভাবলাম রড বা এধরনের ভারি কিছু হবে। প্রথম আঘাতেই চিৎকার করে উঠি। দ্বিতীয় বারের আঘাতে পা-টা ভেঙে গেল মনে হয়েছিল। যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল আর বাঁচব না। মারা যাওয়াও হয়ত সহজ ছিল, এই কষ্ট সহ্য করার চেয়ে। কাকুতি-মিনতি করেছি বাঁচার জন্যে। তাদের মন একটুও গলেনি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৪৫ঘ.)