‘সিএনজি’র প্রত্যেকটা মুহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম, থানা ছিল সেকেন্ড জাহান্নাম’

‘সিএনজি’র প্রত্যেকটা মুহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম, থানা ছিল সেকেন্ড জাহান্নাম’

ঢাকা, ৬ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাছানকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী মরিয়ম। তিনি বলেন, যখন আমাকে তুলে সিএনজির ভেতরে করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন সিএনজির প্রত্যেকটা মুহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম। পরে আমি ভেবেছি, হয়তো থানায় গেলে সেভ থাকবো। কিন্তু না, থানা ছিল আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে একটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে আমি রবিবার শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। এর আগে আমি ব্যক্তিগতভাবে ফারুক ভাইকে চিনতাম না। সেখানে এসে দেখি কিছু লোক ফারুক ভাইকে বেধড়ক মারতেছে। তখন এ দৃশ্য দেখে আমি ফারুক ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে যাই। তারা এমনভাবে কুকুরের মতো মারতেছে, তা দেখে শুধু আমি না, যে কেউ এগিয়ে যাবে। তারপর আমি ফারুক ভাইকে একটি রিকশায় তুলতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতারা তাকে মেরে একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, তারপর তারা আমাকে ধরে নিয়ে আমার শরীরের কোন কোন জায়গায় হাত দিছে তা আপনারা শুনতে চান? আপনারা আমাকে সিমপ্যাথি দেখাতে আসবেন না। সিমপ্যাথি নেওয়ার মেয়ে আমি না। আমি ইনটেনশনালি এই আন্দোলনে এসেছি। অ্যাজ এ হিউম্যান, আমার কিছু রাইটস আছে। যদি আমার কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যেতে পারতো। আমাকে কোর্টে চালান করে দিতে পারতো। কিন্তু বাইরের ছেলেরা কেন আমাকে তুলে নিয়ে যাবে। কেন তারা আমার গায়ে টাচ করবে? এটা শুনতে ইচ্ছা করছে আপনাদের? তারা আমাকে একটি সিএনজিতে করে থানায় নিয়ে যায়। তারা আমার সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করেছে। আমি যখন সিএনজিতে ছিলাম, তখন সিএনজির প্রত্যেকটা মুহূর্ত ছিল আমার কাছে জাহান্নাম। পরে আমি ভেবেছি, হয়তো থানায় গেলে আমি সেভ থাকবো। কিন্তু না, থানা ছিল আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম। আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, তা আপনাদের সামনে বলতে আমার খুব খারাপ লাগছে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানাতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা সেখানে উপস্থিত হয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন। ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হাছানকে কিল, লাথি ও ঘুষি মেরে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। এ সময় ফারুককে বাঁচাতে গেলে আন্দোলনকারী মরিয়মকেও ছাত্রলীগ কর্মীরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৪০ঘ.)