শিশুর শ্বাস কষ্ট

শিশুর শ্বাস কষ্ট

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : শীতের এই সময়ে শিশুরা যেসব রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো শ্বাসকষ্ট। যদিও বাবা-মায়েরা একটু সচেতন হলেই শীতে শিশুরা এ সমস্যাটি থেকে দূরে থাকতে পারে। কীভাবে এ সময় শিশুকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকে দূরে রাখবেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আতিয়ার রহমান।

শীতজনিত শিশুর শ্বাসকষ্টের অন্যতম দুটি কারণ ব্রংকিওলাইটিস, নিউমোনিয়া। ব্রংকিওলাইটিস সাধারণত দুই মাস থেকে দুই বছরের শিশুদের হয়ে থাকে। এতে নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হওয়া, বুকে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া, হালকা জ্বর থাকে। তবে শিশু হাসিখুশি ও স্বাভাবিক থাকে। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিনেই ব্রংকিওলাইটিস ভালো হয়ে যায়। নিউমোনিয়া যে কোনো বয়সেই শিশুর হতে পারে। এতে উচ্চমাত্রার জ্বর, কাশি ও কফ, বুকে শোঁ শোঁ শব্দ ও শ্বাসটান থাকে। অনেক সময় বুকে ব্যথা, মাথাব্যথা ও খিঁচুনি হতে পারে। শিশু অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সেরে উঠতেও সময় বেশি লাগে। ব্রংকিওলাইটিসের চিকিৎসা বাড়িতেও করা যায়। তবে শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা ভালো। এ ছাড়া আগে থেকে শিশুর অ্যাজমা বা হাঁপানি সমস্যা থাকলে, শীতে তা বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ ভাইরাস হলেও, শীতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে এ সময় পুরনো শ্বাসকষ্ট সমস্যা বেড়ে যায়।

শ্বাসকষ্ট প্রতিকারে অভিভাবকদের করণীয়
সর্দিতে শিশুর নাক বন্ধ হয়ে থাকলে এক চা-চামচ কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ গুলে ড্রপারের সাহায্যে নাকের দুই ছিদ্রে দুই ফোঁটা দিয়ে দিন। শিশু আরামবোধ করবে। প্রয়োজনে নসল ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠাণ্ডা দূর করার জন্য শিশুকে যষ্ঠিমধু, তুলসী পাতার রস মধু দিয়ে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। পাশাপাশি শিশুকে প্রচুর পানি, তরল খাবার, টাটকা শাকসবজি ও ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফলমূল খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ খাওয়া শিশুদের বুকের দুধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
খুব বেশি শ্বাসকষ্ট হলে, শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের চামড়া পাঁজরের হাড়ের ভেতর ঢুকে গেলে, বমি বমি ভাব ও শিশুর দুর্বল হয়ে পড়লে এবং কাশি সাত দিনের বেশি স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ইনহেলার ও নেবুলাইজার ব্যবহার
গুরুতর শ্বাসকষ্টে ইনহেলার ও নেবুলাইজার ব্যবহার করুন। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। পাশাপাশি ইনহেলার ও নেবুলাইজার দ্রুত শ্বাসকষ্ট নিরাময় করে। ইনহেলার শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ব্যবহার করতে পারে। তবে যেসব শিশু এবং বৃদ্ধ ব্যক্তি সরাসরি ইনহেলার টানতে পারে না, তাদের গ্যাসের মাধ্যমে নেবুলাইজার দেওয়া হয়।

সতর্কতা
সব ইনহেলার একই ধরনের কাজ করে না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত নয়।

শিশুর শ্বাসকষ্টে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো উচিত নয়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৪৬ঘ.)