শিবলুর কারনে ট্রেনে কাটা পড়া শিশুটি ফিরে পেল তার পরিবারকে!

শিবলুর কারনে ট্রেনে কাটা পড়া শিশুটি ফিরে পেল তার পরিবারকে!

চট্টগ্রাম মহানগরীর আমবাগান এলাকায় গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনে কাটা পড়ে হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া শিশুটির পিতা-মাতাকে খুজে বের করে পিতা-মাতার কোলে ফিরিয়ে দিলেন শিশুটিকে উদ্ধারকারী শরীফ হায়দার শিবলু।

গত (৪ ফেব্রুয়ারী) মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আমবাগান এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে শাহজালাল নামে ৮ বছরের এক শিশু তৎক্ষনাৎ শিশুটিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নাম্বার ওয়ার্ড সার্জারি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করে অপারেশন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন উদ্ধারকারী শরীফ হায়দার শিবলু এবং প্রাথমিক চিকিৎসার খরছ বহন করে শিবলু।

তারপর শিবলু আহত শিশুটির দেওয়া ঠিকানামতে পরিবারের কাছে সংবাদ দিতে সহযোগিতা নেন স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিকের। ঐ সাংবাদিক শিশুটির ঠিকানাসহ সংবাদ পৌঁছাতে চট্টগ্রাম বন্দর থানাকে ফোন করে জানালেও পুলিশ ঠিকানা বের করতে পারেনি।

এদিকে শিবলু শিশুটির পরিবারকে খুজে পেতে চট্টগ্রাম মেডিকেলের দায়ীত্বরত পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ হামিদ ও সিটি,এসবির সহযোগিতা চান কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি।

এদিকে গতকাল সকালে হাসপাতালে শিবলু শিশুটিকে দেখতে গিয়ে দেখে শিশুটির পরিবার এখনো শিশুটির খবর পায়নি। শিশুটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন।

তখন শিবলু স্থানীয় পত্রিকার ঐ সাংবাদিককে ফোন করে ঘটনাটি জানায় তারপর শিবলু এবং ঐ সাংবাদিক খুজতে বের হয় শিশুটির পরিবারকে। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে তিনটার সময় শিশুটির পরিবারকে খুজে পায় তারা।

তারপর শিশুটির পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলের ৫ম তলার ২৬ নাম্বার ওয়ার্ডের ১৭ নাম্বার বেডে নিয়ে যায় শিবলু ও ঐ সাংবাদিক। এরপর সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের।

সন্তান হারা মা- বাবা তাদের সন্তানকে ফিরে পেয়ে যেন এক বিশাল রাজ্য জয় করে ফেলেছেন এমন দৃশ্যই ফুটে উঠে শিশুটির মা বাবার চোখে। আবেগ আপ্লুত হয়ে উঠে সাংবাদিক ও শিবলু জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শিশুটির বাবা আবুল হোসাইন ও মা ময়না বেগম।

শিশুটির বাবা আবুল হোসেন জানায় তিনি ও তার স্ত্রী জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ২ সন্তানকে বাসায় রেখে চলে যান। গত মঙ্গলবার বাসায় ফিরে তাদের বড় সন্তান ৮ বছরের শাহজালালকে না পেয়ে গভীর রাত পর্যন্ত খুজেও কোন হদিস পাননি।

বন্দর থানা পুলিশ শিশুটির অবিভাবককে খুজে না পাওয়ার ঘটনায় শিশুটির এলাকার স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ হচ্ছে জনগণের সেবক পুলিশ একটু খোঁজ করলেই আমরা শিশুটির দূর্ঘটনার সংবাদটি রাতেই পেতাম। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। তারা আরো বলেন, প্রশাসনকে মানবিক সেবায় আরো সতর্ক হয়ে দায়ীত্ব পালন করতে হবে।