চট্টগ্রামে সৈকতে নিখোঁজ ৩ তরুণের লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রামে সৈকতে নিখোঁজ ৩ তরুণের লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রাম, ৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সৈকতে সাগরে নেমে নিখোঁজ হওয়া তিন তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে সমুদ্র উপকূলের কিছুটা দুরে লাশ ৩টি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে গঠিত উদ্ধারকারী দল।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ওয়াসি আজাদ নিখোঁজ ৩ তরুণের লাশ উদ্ধারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গোসল করতে নেমে তাঁরা নিখোঁজ হন। নিখোঁজ ৩ তরুণ হলেন মো. আলাউদ্দিন (২০), সাইফুল ইসলাম (১৯) ও মো. ইয়াসিন (১৮)। তারা চট্টগ্রাম নগরের ঝাউতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। আলাউদ্দিন ও সাইফুল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ইয়াসিন নগরের একটি ছাপাখানায় কাজ করতেন।

এর আগে গত ২১ জুন একই এলাকাই দুই ছাত্র নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরদিন তাদের লাশ উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল। ১৫ দিনের মাথায় আবারো ৩ জন নিখোঁজের ঘটনা ঘটল।

শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে উৎসুক জনতা ও নিখোঁজ তরুণদের স্বজনেরা উপকূলে ভিড় করছেন। দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় কিছু জনতাকে উদ্ধারকারী দলের ওপর উত্তেজিত হতে দেখা যায়। তারা ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, ভাটা অবস্থায় উদ্ধার করা না গেলে জোয়ারের সময় উদ্ধার করা আর সম্ভব নয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, গত ২১ জুন আরো ২ ছাত্র নিখোঁজ হয়েছিলেন। কিন্তু উদ্ধার অভিযানে কিছুটা গাফিলতি ছিল। তাই তাদের জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। এবারো উদ্ধারকারীদের চরম গাফিলতি দেখা গেছে। ভাটার সময় উদ্ধার করা না গেলে জোয়ারের সময় উদ্ধার করা সম্ভব নয়।

নিখোঁজ সাইফুলের খালাতো ভাই আরিফ হোসেন বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে লেগুনায় করে ২৩ জন একসঙ্গে ওই সৈকতে যান। ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সমুদ্রে নেমে গোসল করার সময় একজন নিখোঁজ হন। তাকে খুঁজতে গিয়ে অপর দুজন নিখোঁজ হন।

নিখোঁজ মো. ইয়াসিনের মা পারভীন আক্তার বলেন, খাওয়াদাওয়া শেষে তারা ঝাউবনে বসে ছিলেন। ছেলেরা খোলা জায়গায় খেলছিলেন। এ সময় তার ছেলেসহ ৩ জন পানিতে নামার সময় অন্য ছেলেরা বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা কথা শোনেননি।

সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত ২১ জুন দুই ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার পর পানিতে না নামার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০টির বেশি সতর্কতা সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘সাবধান, অনুমতি ছাড়া সাগরের পানিতে নামা নিষেধ।’ কয়েক দিন পরপর মাইকিং করা হচ্ছে। তবুও জেনেশুনে পানিতে নেমে বিপদ ডেকে আনছেন কিছু যুবক। শুক্রবার পরিবারের পক্ষ থেকে ওই তিন তরুণকে বাঁধা দেওয়ার পরও তারা কথা শোনেননি।

উদ্ধারকারী দলের কোনো গাফিলতি ছিল না দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তারিকুল আলম বলেন, শুক্রবার রাত থেকে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় তাঁদের বেগ পেতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়। শনিবার সকাল থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ওয়াসি আজাদ বলেন, স্থানীয় জনতা কোনো কারণ ছাড়াই উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকাজে তারা কোনো গাফিলতি করেননি। নানা কৌশল অবলম্বন করছেন উদ্ধারকাজে।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৪০ঘ.)