বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন

পিয়ন থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার মালিক!

পিয়ন থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার মালিক!

ছিলেন জেলা প্রশাসক অফিসের পিয়ন। এখন তিনি চার হাজার কোটি টাকার মালিক। ভুঁইফোঁড় রিয়েল এস্টেট ও ঋণদান সমিতি খুলে এসব টাকা কামিয়েছেন তিনি। সাধারণ মানুষকে দ্বিগুণ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়েছেন তিনি। ঋণ দেওয়ার কথা বলে নিজে ও নিজের পরিবারের সদস্যদের নামেও কিনেছেন জমি। এ ঘটনা বাগেরহাটের। বাগেরহাট ডিসি (জেলা প্রশাসক) অফিসের সাবেক পিয়ন (এমএলএসএস) আবদুল মান্নান তালুকদারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্ত প্রতিবেদন এসব তথ্য উঠে এসেছে। দুর্নীতি দমন কশিনও আব্দুল মান্নানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামে কোম্পানি খোলেন আব্দুল মান্নান। তিনি প্রায় দুই হাজার গ্রাহককে ঠকিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তার প্রতিষ্ঠান উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখাতো। একইসঙ্গে ধর্মভীরু মানুষকে আকৃষ্ট করতে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংকিংয়ের মতো লভ্যাংশ দেওয়ারও প্রস্তাব দিত।

জানা গেছে, চার বছরে অর্থ দ্বিগুণ হবে বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর এ লোভে পড়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেও তার প্রতিষ্ঠানে রাখেন অনেকে। এছাড়া আবদুল মান্নানের মালিকানাধীন নিউ বসুন্ধরা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ দুইটিসহ মান্নানের মালিকানাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের উদ্যোগে শিগগিরই এ তদন্ত শুরু হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের খুলনা অফিস তদন্ত করেছে। এরপরই প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়ে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ওই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আবদুল মান্নান তালুকদারের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে এখন আরও গভীর অনুসন্ধান চলছে।

জানা গেছে, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত শাখার সাবেক উমেদার (এমএলএসএস) আবদুল মান্নান তালুকদার দীর্ঘ ২৬ বছর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এরপর থেকেই তার এ ব্যবসার মাধ্যমে তিনি কোটিপতি বনে যান।

একে/