পেঁয়াজ সংকটের জন্য ভারত দায়ী: বাণিজ্যমন্ত্রী

পেঁয়াজ সংকটের জন্য ভারত দায়ী: বাণিজ্যমন্ত্রী

দেশে চলমান পেঁয়াজ সংকটের জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘তারা আগে না জানিয়ে হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমরা যে শিক্ষা পেলাম ভবিষতে আর কখনও এরকম সংকট হবে না। দ্রুতই পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে।’

বুধবার দুপুরে রংপুরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন। ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন মন্ত্রী। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২২ থেকে ২৩ লাখ টন। এর মধ্যে পচে যাওয়ায় পেঁয়াজ থাকে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টন। ফলে আমাদের ৭/৮ লাখ টন ঘাটতি থাকে। এই ঘাটতির ৯০ ভাগ পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু এবার ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। ফলে আমরা বিপদে পড়ে যাই। যার কারণে পেঁয়াজের হঠাৎ করে সংকট দেখা দেয়। তারা যদি আমাদের আগে জানাতো তাহলে আমরা এ সমস্যায় পড়তাম না। যেহেতু শুধু ভারত থেকেই আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতাম, সে কারণে আমরা বিকল্প চিন্তা করিনি। কিন্তু তারা যে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেবে তা আমরা কখনও কল্পনাও করিনি। অথচ ভারত থেকে গড়ে প্রতি মাসে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হতো, তারা এটা সরবরাহ করতো। এভাবেই সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর এবং রমজান মাসে পেঁয়াজ আমদানি করা হতো।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানে করে পেঁয়াজ আমদানি করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। সে কারণে দেশের বড় বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা নেয়। পেঁয়াজ জাহাজে করে আনতে এক মাস লাগে। এরপর সমুদ্রবন্দর থেকে বিভিন্ন জেলায় আসতে আরো ৭/৮ দিন লেগে যায়। তারা জানিয়েছে, যেহেতু পেঁয়াজের সিজন নয় তাই পেঁয়াজ আমদানি করতে হলে দাম এমনিতেই বেড়ে যাবে। কারণ আমদানি খরচ বেশি পড়ে যায়। এরপরও আমরা জনগণের অসুবিধার কথা চিন্তা করে ২০০ টাকা কেজি করে পেঁয়াজ কিনে টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

তিনি বলেন, ‘ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ার পর আমাদের শিক্ষা হয়ে গেছে। তারা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছে তাতে করে কোন কোন সময় পেঁয়াজের সংকট থাকে কীভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় তা আমরা জেনে গেছি। ফলে আর কখনও পেঁয়াজ সংকটে পড়তে হবে না।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা মিশরসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছি মায়ানমার থেকে পেঁয়াজ আনছি। ফলে কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’